শুধু টেইলর সুইফট নামটাই যথেষ্ট। আলাদা করে খুব বেশি পরিচয় দরকার হয় না। গ্র্যামি পুরস্কারজয়ী পপ তারকা সুইফট ইরাস ট্যুর নামে বিশেষ কনসার্টের কারণে আবারও আলোচনায়। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিবেদন সে কথাই বলছে।
সূত্র বলছে, ১২ থেকে ১৪ মে তিন দিনের ফিলাডেলফিয়ার ৬৭ হাজার আসনবিশিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল স্টেডিয়াম লিঙ্কন ফিন্যান্সিয়াল ফিল্ডে তিনটি কনসার্ট করেন টেইলর সুইফট। যার সরাসরি প্রভাব পড়ে ফিলাডেলফিয়ার পর্যটন খাতে।
কনসার্টে অংশ নেওয়া ভক্তের কারণে শহরের হোটেল ব্যবসা চাঙ্গা হয়ে ওঠে। করোনার পর শহরটির হোটেল ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি দৃশ্যমান হয়। ৩৩ বছর বয়সী পপ তারকার ইরান ট্যুর পাঁচটি মহাদেশের ১৭টি দেশে ১৩১টি কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে।
গায়িকা টেইলর সুইফটের জন্ম ১৯৮৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে। সংগীত দুনিয়ার শিরোনাম হতে তিনি যেন বরাবরই পারদর্শী। আছেন ক্যারিয়ারের তুঙ্গে।
বাবা স্কট সুইফট। যিনি পেশায় একজন শেয়ার ব্যবসায়ী। মা অ্যান্ড্রি। সুইফটের একটি ছোট ভাই আছে। নাম অস্টিন। সুইফট যখন চতুর্থ শ্রেণিতে তখন জাতীয় পর্যায়ে মনস্টার ইন মাই ক্লোসেট কবিতা আবৃতিতে পুরস্কার অর্জন করেন।
সংগীত জীবনের শুরুতে সুইফট এক কম্পিউটার মিস্ত্রির কাছে গিটারের কর্ড বাজানো শেখেন। এরপর তিনি তার প্রথম গান লাকি ইউ রচনা করেন। স্কুলের প্রতি আগ্রহ না থাকলেও তিনি নিয়মিত গান লিখতেন। এ জন্য স্কুলের বাচ্চারা তার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করবে, এমনটা ভেবে তাদের নিয়েও গান লিখতেন।
কানাডিয়ান কান্ট্রি সংগীতশিল্পী শানায়া টোয়েইন সুইফটকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেন। তার দাদি ছিলেন পেশাদার অপেরা শিল্পী। তবে সুইফটের আগ্রহ ক্রমাগত কান্ট্রি সংগীতের দিকে ঝুঁকতে থাকে। সুইফট ছিলেন খ্যাতিমান কান্ট্রি সংগীতশিল্পী প্যাটসি ক্লাইনের বিশেষ ভক্ত।
সুইফট তার অ্যালবাম রেপুটেশন প্রকাশ করেন। রেপুটেশন সুইফটের স্টুডিও অ্যালবাম। এতে ১৫টি গান আছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই অবমুক্ত করা হয় রেপুটেশন। কেন এমন করলেন এ বিষয়ে কিছুই না জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মার্কিন এ গায়িকা লিখেছেন, তিন দিন আগেই রেপুটেশন চলে এলো।
সুইফট খুবই সরল। যেমন ক্যান্সারে আক্রান্তদের খবর জানলে তিনি নিজেই ফোন করে সাহস জোগান। নিজের ২৪তম জন্মদিনে ১ লাখ ডলার দিয়েছেন আর্থিক সংকটে পড়া সংগীতশিল্পীদের। ডু সামথিং ডট ওরগের তালিকায় একেবারে শীর্ষে উঠে আসে সুইফটের নাম।
সুইফটের লাভ স্টোরি গানটি কান্ট্রি এবং পপসংগীতের তালিকার বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। মুক্তির সাত দিনেই ইন্টারনেটে ১ লাখ ২৯ হাজার কপি বিক্রি হয় অ্যালবামটি। অনলাইনে কোনো কান্ট্রি সংগীতের অ্যালবামের মধ্যে এটি রেকর্ড সৃষ্টি করে।
সুইফট মানেই উন্মাদনা। অনলাইনে রেকর্ডের মহড়া। ভক্তদের পাশে দাঁড়ান নানাভাবে। আবার সংগীতশিল্পীদের সমস্যার পাশে দাঁড়াতেও পিছপা হন না। ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য সুইফটের আছে কঠিন মমতা। সুযোগ পেলেই তিনি ক্যান্সার আক্রান্তের সঙ্গে আলাপ করেন। জীবন যুদ্ধক্ষেত্র। হতাশা আসবে জীবনে। তবে দমে যেতে নেই। অন্যের জন্য কিছু করার প্রচেষ্টার মধ্যেই জীবনের প্রশান্তি খুঁজে বেড়ান সুইফট, যা তাকে আত্মবিশ্বাসী করে রাখে।
মন্তব্য করুন