বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২
বিশ্বজিৎ ঘোষ
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৪২ এএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৫৬ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আ মরি বাংলা ভাষা

বাঙালির ঐতিহাসিক ঐক্য

বাঙালির ঐতিহাসিক ঐক্য

ভাষাভিত্তিক একটি জাতি হিসেবে বাঙালির ঐতিহাসিক আত্মপ্রকাশের ইতিহাসে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি একটি মহত্তম দিন। একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির আত্মজাগরণের দিন, স্বাধিকারের স্বপ্ন বপনের দিন, আপন সত্তাকে বিপুল মহিমায় ঘোষণা করার দিন, সংঘশক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে শোষকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উচ্চারণের দিন। বাস্তিল দিবসে ফরাসি জাতি শতবছরের গ্লানি মুছে যেমন লাভ করেছিল নবজন্ম, তেমনি একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাঙালি জাতি খুঁজে পেয়েছিল তার আত্মপরিচয়ের নতুন ঠিকানা। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন প্রধানত একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন হলেও পরিণতিতে তা জাতিসত্তার আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনের সূচনা উৎস হিসেবে পালন করেছে ঐতিহাসিক ভূমিকা।

১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সফল পরিণতি লাভ করলেও এ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটেছিল দেশ বিভাগের অব্যবহিত পরেই। অবশ্য গোটা উনিশ শতকজুড়েই বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা কী, এ নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক চলেছে। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে এসে এ বিতর্কের এক ধরনের মীমাংসা হয়ে যায়। ১৯১৮ সালে মোহাম্মদ আকরম খাঁ, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ পরিষ্কার অভিমত ব্যক্ত করেন যে, বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা বাংলা।

মাউন্টব্যাটেন-পরিকল্পনা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আগেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। এ সময় মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখেন। তরুণ লেখক আবদুল হক ও মাহবুব জামাল জাহেদীও অনুরূপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ‘মিল্লাত’ ও ‘ইত্তেহাদ’ পত্রিকায় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ব্যাখ্যা করে বিভিন্ন লেখা প্রকাশিত হতে থাকে। কাজী মোতাহার হোসেন, মুহম্মদ এনামুল হক, ফররুখ আহমদ, আবুল মনসুর আহমদ, আবুল কাসেম প্রমুখ ব্যক্তি অভিন্ন দাবির সমর্থনে লেখা প্রকাশ করেন; একই দাবির পক্ষে সাংগঠনিক উদ্যোগ গ্রহণ করে তমদ্দুন মজলিস। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণার দাবিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং ১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসেই গঠিত হয় ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’।

সাতচল্লিশ সালে দেশ বিভাগের পর বাংলা ভাষা সম্পর্কে বাঙালির এ আবেগকে আমলে নিতে চায়নি মুসলিম লীগ সরকার। ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের ব্যবহার্য ভাষা ইংরেজির পাশাপাশি উর্দু চালানোর সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি সংশোধনী প্রস্তাবে বাংলা ভাষাকে ব্যবহার্য ভাষা করার দাবি তোলেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান রূঢ় ভাষায় ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। গণপরিষদে শুধু ব্যবহার্য ভাষা নয়, ধীরেন্দ্রনাথ

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলেন বলে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তিরস্কৃতও হন। প্রধানমন্ত্রীর এ আচরণের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে—১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ সূচিত হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। অভিন্ন দাবিতে যশোহরসহ পূর্ববাংলার নানা স্থানে রাষ্ট্রভাষার পক্ষে আন্দোলন দানা বাঁধতে থাকে। এ পটভূমিতে মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ ঢাকায় ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ‘না’ ‘না’ ধ্বনি তুলে জিন্নাহর ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং এভাবে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন অর্জন করে নতুন মাত্রা।

১৯৪৮ থেকে ১৯৫১—এ চার বছরে স্পষ্ট কর্মসূচির অভাবে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন আস্তে আস্তে থিতিয়ে পড়ে। প্রতি বছর ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের বার্ষিকী পালিত হলেও, এ বিষয়ে তেমন কোনো সাংগঠনিক উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু ১৯৫১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন আবার ঘোষণা করেন—পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। সঙ্গে সঙ্গে ছাত্ররা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, থিতিয়ে পড়া রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পায় নতুন গতি—১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে যা চূড়ান্ত রূপ পরিগ্রহ করে, সৃষ্টি হয় বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল এক অধ্যায়, বিশ্বমানবের উজ্জ্বল এক উত্তরাধিকার।

১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে রক্তাক্ত বিজয়ের পরও রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে থামিয়ে রাখার নানা ষড়যন্ত্র চলতে থাকে গোপনে প্রকাশ্যে। পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব গৃহীত হয় ১৯৫৪ সালের মে মাসে, যুক্তফ্রন্টের কাছে সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয়ের পর। ১৯৫৬ সালে গৃহীত পাকিস্তানের প্রথম সংবিধানে বাংলা ও উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তবে বলা হয় যে, ২০ বছর পরে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ১৯৬২ সালে গৃহীত পাকিস্তানের দ্বিতীয় সংবিধানে আবারও ২০ বছরের অপেক্ষার পালা ঘোষিত হয়। কিন্তু বাঙালিকে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হয়নি। ১০ বছরের মধ্যেই ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গৃহীত বাংলাদেশের সংবিধানের ৩ নম্বর অনুচ্ছেদে ঘোষিত হয়—‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা’।

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, পূর্বেই ব্যক্ত হয়েছে যে, প্রথমে ছিল একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন। কিন্তু কালক্রমে এ আন্দোলন আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপ পরিগ্রহ করে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা রূপে প্রতিষ্ঠা করা। তবে একই সঙ্গে এ আন্দোলনের অন্তর্নিহিত লক্ষ্য ছিল পূর্ববাংলার জনগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র জাতীয় চেতনা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে ন্যায়বিচারের চেতনার স্বীকৃতি লাভ। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পরিণতিতে রূপান্তরিত হয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে—রাষ্ট্রভাষার সঙ্গে ক্রমে যুক্ত হয়েছিল জাতি-রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন। এ স্বপ্ন, এ আকাঙ্ক্ষা ধাপে ধাপে রূপ পরিগ্রহ করে। বায়ান্ন সালের রক্তাক্ত ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে যে চেতনা রূপলাভ করে, উত্তরকালে প্রতি ফেব্রুয়ারিতে তা হয়ে ওঠে বলয়িত, হয়ে ওঠে গভীর ব্যাপক সুদূরসঞ্চারী। প্রতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালিকে নতুন শপথে প্রদীপ্ত করে তুলেছে, তার চেতনায় সঞ্চারিত করেছে নতুন মাত্রা। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের একুশ দফা, আওয়ামী লীগের ছয় দফা, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির চৌদ্দ দফা, ছাত্রসংগ্রাম কমিটির এগারো দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জন—সবই ঘটেছে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের অন্তর্গূঢ় প্রেরণায়, একুশে ফেব্রুয়ারির কালজয়ী চেতনা বিকাশের ধারাবাহিকতায়।

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সক্রিয় রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে তাদের মতাদর্শের ভিত্তিতে চিহ্নিত করা এখানে জরুরি কাজ বলে মনে করি। যেসব রাজনৈতিক শক্তি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ছিল, সেগুলোকে নিম্নোক্তভাবে বিন্যাস করা যায়:

ক. বিপ্লবী সাম্যবাদী রাজনীতির অনুসারীরা এবং তাদের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টি, গণতান্ত্রিক যুবলীগ ও ছাত্র ফেডারেশন। খ. পাশ্চাত্য বুর্জোয়া গণতন্ত্রের অনুসারীবৃন্দ (শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আব্দুস সালাম, আতাউর রহমান খান, শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ), যাদের নেতৃত্বে মুসলিম লীগের মধ্যে দুটি শক্তিশালী ধারা গড়ে ওঠে—এ ধারাদ্বয়ই ক্রমে আওয়ামী মুসলিম লীগ এবং মুসলিম ছাত্রলীগ নামে আত্মপ্রকাশ করে।

পরবর্তীকালে ‘মুসলিম’ শব্দ বাদ দিয়ে ধারাদ্বয় আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ নামে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। গ. ইসলামী সাম্যবাদী চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত তমদ্দুন মজলিশ ও ইসলামী ভ্রাতৃসংঘ (অবশ্য ইসলামী সাম্যবাদী ভাবাদর্শে বিশ্বাসী মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন পৃথক একটি রাজনৈতিক উপধারাও আওয়ামী মুসলিম লীগের অভ্যন্তরে সক্রিয় ছিল)। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দল, তাদের কর্মসূচি, নেতৃবৃন্দের ভাষণ, বক্তৃতা, প্রচারপুস্তিকা, পুলিশি রিপোর্ট—এসব বিশ্লেষণ করে উপর্যুক্ত বিন্যাসের যৌক্তিকতা সহজেই প্রমাণ করা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, পাকিস্তান সৃষ্টির পাঁচ বছরের মধ্যে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে এতগুলো শক্তির ঐক্য ও সহাবস্থান কীভাবে সম্ভব হয়ে উঠল?

তৎকালীন ইতিহাসের দিকে তাকালে উপর্যুক্ত জিজ্ঞাসার যথার্থ উত্তর পাওয়া সম্ভব। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে পূর্ববঙ্গের খাজা নাজিমউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নবাব-নিয়ন্ত্রিত মুসলিম লীগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপিত হয়। নবাবরা আশরাফ মুসলমান হিসেবে প্রথম থেকেই উর্দু ভাষাকে নিজেদের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। পক্ষান্তরে সচ্ছল কৃষকের সন্তান পূর্ববাংলার নবজাগ্রত মুসলমান মধ্যবিত্ত বাঙালিরা তাদের প্রাত্যহিক জীবনে বাংলা ও ইংরেজি ভাষাকেই গ্রহণ করেছিল। বাংলা কিংবা ইংরেজি ছাড়া বাঙালির পক্ষে চাকরি করা ও ব্যবসা-বাণিজ্য চালানো প্রায় অসম্ভব ছিল। উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব অতি দ্রুত নবজাগ্রত মুসলিম মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পক্ষে নিয়ে আসেন। অন্যদিকে দলের সাধারণ সদস্যরা ছিলেন বাংলাভাষী, ফলে তারাও স্বেচ্ছায় সংযুক্ত হন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সঙ্গে। সাধারণ কৃষকের সন্তানদের ভাষা আন্দোলনে শামিল করানোর ক্ষেত্রে ধর্মীয় সাম্যবাদী ও বিপ্লবী সাম্যবাদী মতাদর্শের নেতৃত্ব ভাষা আন্দোলনের পক্ষে টেনে নিয়ে আসতে সফল হয়েছিলেন। এসব শক্তির সমবায়েই গড়ে ওঠে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পক্ষে ব্যাপক জাতীয় ঐক্য। জাতীয় এ ঐক্যই বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি দৃঢ়করণে পালন করে ঐতিহাসিক ভূমিকা।

উত্তরকালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক শক্তিগুলোর নানামাত্রিক রূপান্তর ঘটেছে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের চেতনা যতই একাত্তরমুখী হয়েছে, ততই রাজনৈতিক দলগুলোর পরিণতি চূড়ান্ত রূপ লাভ করেছে। ইসলামী সাম্যবাদী চিন্তার ধারাটি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়েছে, পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শক্তির সঙ্গে তাদের অনেকে হাত মিলিয়েছেন। এমনকি তাদের কেউ কেউ পরবর্তীকালে এ মত ব্যক্ত করেছেন যে, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে তারা চরম ভুল করেছেন। অন্যদিকে বিপ্লবী সাম্যবাদী কমিউনিস্টরা জাতীয় আন্দোলনের নামে কখনো শ্রেণি আন্দোলন ও নিজেদের স্বাধীন ভূমিকা বিসর্জন দিয়েছেন, আবার কখনো কখনো শ্রেণি আন্দোলনের নামে জাতীয় আন্দোলনের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিপরীত অবস্থান গ্রহণ করেছেন। এরকম ডান ও বাম বিচ্যুতির ফলে তাদের সম্ভাবনা ও শক্তি যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারেনি। নেতিবাচক এ প্রবণতার পেছনে আন্তর্জাতিক কেন্দ্রগুলোর ভূমিকার কথাও এখানে আমরা মনে রাখব। ফলে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন-উত্তর জাতীয় আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে উঠতি মধ্যবিত্ত সমাজ ও তাদের রাজনৈতিক দল।

সন্দেহ নেই, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ন্যূনতম ইস্যুতে বাঙালির ঐতিহাসিক ঐক্যের এক অনুপম দৃষ্টান্ত। এ কথা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন মোটেই নয় একটি সমসত্ত্ব (Homogeneous) বা বিরোধহীন নিখাদ আন্দোলন। সাধারণ স্বার্থের কারণেই এ আন্দোলনের স্রোতে মিলিত হয়েছিল ডান ও বাম প্রবাহ। এ প্রবাহ বা ঐক্যই আবার বহন করে দ্বন্দ্বের বীজ। এ দ্বন্দ্বই নির্মাণ করে ভাবীকালের নতুন কোনো আন্দোলন, নতুন কোনো ডিসকোর্স, নতুন কোনো থিসিস বা সন্দর্ভ।

লেখক: শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইঞ্জিন সংকটে ‘নাজুক’ রেল অপারেশন

স্পেনে রিয়ালের আর্জেন্টাইন তারকাকে নিয়ে অদ্ভুত বিতর্ক

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হলেন আবু তাহের

মানবিক ড্রাইভার গড়তে নারায়ণগঞ্জে ডিসির যুগান্তকারী উদ্যোগ

গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষায় জাতীয় পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

পিএসসি সদস্য হলেন অধ্যাপক শাহীন চৌধুরী

রিয়ালের হয়ে ইতিহাস গড়লেন আর্জেন্টিনার ‘মাস্তান’

দাম্পত্য কলহ এড়ানোর সহজ ৫ উপায়

‘গণতন্ত্রের জন্য আরও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হতে পারে’

আর্থিক খাত নিয়ে খারাপ খবর দিলেন গভর্নর

১০

পৌরসভার ফাইল নিয়ে দুই কর্মকর্তার হাতাহাতি

১১

কর্মস্থলে ‘অনুপস্থিত’, এবার পুলিশের ২ এসপি বরখাস্ত

১২

এশিয়া কাপ দল নিয়ে তোপের মুখে বিসিসিআই

১৩

নারী-শিশুসহ ছয় ভারতীয় নাগরিক আটক

১৪

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার : উপদেষ্টা আসিফ

১৫

পিয়াইন নদীতে অবাধে বালু লুট, হুমকিতে বসতবাড়ি 

১৬

সোনালী ও জনতা ব্যাংকের অফিসার পদের ফল প্রকাশ

১৭

নরসিংদীতে একজনকে কুপিয়ে হত্যা

১৮

হোয়াটসঅ্যাপে নতুন কৌশলে অর্থ চুরি, যেভাবে নিরাপদ থাকবেন

১৯

টিটিইসহ ৫ জন আসামি / তিন মাসেও শেষ হয়নি ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার তদন্ত

২০
X