লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জোটের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদিকে। এখন জোটের কোনো শরিক বিদ্রোহ ঘোষণা করলেই তাকে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সংকটে পড়তে হতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেকেই মনে করছেন, সংকট মোকাবিলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হতে পারেন মোদি। এজন্য তারা মনে করছেন, বিজেপির সঙ্গে মমতার অতীত সম্পর্ক। অটল বিহারি বাজপেয়ির আমলে কেন্দ্রে এনডিএ সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন মমতা। বাজপেয়ি ও লালকৃষ্ণ আদভানির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কও ভারতের রাজনীতিতে সুবিদিত। এই সূত্র ধরে সরকার গঠনে সংকটকাল উপস্থিত হলে মমতার শরণাপন্ন মোদি হতেই পারেন, ধারণা অনেকের।
তবে মমতা অনেক আগে থেকেই বলছেন, মোদি ও অমিত শাহের সঙ্গে তারা কোনো ‘ব্যক্তিগত সমস্যা’ নেই। তবে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের ‘মতাদর্শগত সমস্যা’ রয়েছে। আরও বলেন, অটল বিহারি বাজপেয়ির বিজেপি এবং মোদি-শাহের বিজেপি এক নয়। এদিকে কেজরিওয়ালের পর মমতাই হতে পারেন মোদির টার্গেট—এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে অনেক দিন ধরেই। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুখেও শোনা গেছে এ কথা। তবে শুধু মমতা নয়, তার ভাষ্যে, মোদি আবার ক্ষমতায় এলে জেলে যেতে হবে সব বিরোধী নেতাকে। লোকসভা নির্বাচনের মুখেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আমআদমি পার্টি (আপ) নেতা কেজরিওয়ালকে আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। এর আগে ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। মোদির টার্গেট থেকে বাঁচতেই মোদির সঙ্গী হতে পারেন মমতা, বলছেন অনেকে।
২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন। এর আগ পর্যন্ত নিজের গদি সুরক্ষিত রাখতে মোদির প্রস্তাবে মমতার সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন তো আছেই। নতুন করে বিধানসভায় সরকার গঠনে প্রয়োজন হতেই পারে মোদির সমর্থন। সব দিক বিবেচনায় মোদির পাশে মমতা দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন।
এ ছাড়া মোদির এনডিএ জোটের বিপরীতে বিরোধী পক্ষ ইন্ডিয়া জোটের রুখে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে মমতার তৃণমূল কংগ্রেসের ভূমিকা প্রচুর। পশ্চিমবঙ্গে বেশি ঘেঁষতে না দিলেও ইন্ডিয়া জোটের প্রতি মমতার সমর্থন ছিল শুরু থেকেই। আর শর্তসাপেক্ষে এ জোটকে সমর্থন দিচ্ছেন তিনি। যে কোনো সময় সমর্থন তুলে নিতে পারেন। তখন যে মোদির দিকেই তার সমর্থনের পাল্লা ঝুঁকবে না, তা কে বলতে পারে!