অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ’র নির্বাচিত কলাম নিয়ে ‘মাস্টার অব ফরেন এক্সচেঞ্জ’। এটি তার রচিত প্রথম একক গ্রন্থ।
গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে দাঁড়িকমা প্রকাশনী থেকে। অমর একুশে বইমেলায় স্টল নম্বর ৯৪ (ঢাকা) ও স্টল নম্বর ৫১-৫২ (চট্টগ্রাম) তে দাঁড়িকমা প্রকাশনীর বইটি পাওয়া যাচ্ছে। বইমেলা থেকে ২৫ শতাংশ এবং শিক্ষার্থীরা ৩০ শতাংশ ছাড়ে সংগ্রহ করতে পারবেন বইটি।
লেখক মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক হিসেবে কর্মরত। প্রাতিষ্ঠানিক ক্যারিয়ারে তিনি বৈদেশিক বাণিজ্য ও ব্যাংক পরিদর্শন বিষয়ে বেশ সুনাম ও দক্ষতা অর্জন করেছেন। বৈদেশিক বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রকীয় বিধানাবলি এবং পরিদর্শনের কলা-কৌশল বিষয়ে তার লিখিত ৩টি হ্যান্ডবুক তার সহকর্মীদের কাছে গৃহীত ও অত্যন্ত সমাদৃত হয়েছে।
বইটি পড়ে পাঠক যা জানতে পারবেন: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালিত হয় ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) এর প্রণীত বিবিধ বিধান (UCP, ISBP, URR, URG, ISP ইত্যাদি) অনুসারে। সমস্যা হলো ঐ সকল বিধান অনাবশ্যক জটিল ইংরেজিতে লিখিত, যা এ দেশের অধিকাংশ মানুষের নিকট দুর্বোধ্য। আবার, এদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন সংক্রান্ত কার্যক্রম বেশ কয়েকটি আইনের অধীনে পরিচালিত হয়। ঐ সকল আইনের অধীনে কয়েকটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা কাজ করে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণীত আদেশ, বিধি, নীতি, প্রজ্ঞাপন, নির্দেশিকা দ্বারা বৈদেশিক বাণিজ্য বিভিন্ন মাত্রায় নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু এ সকল দেশি ও বিদেশি বিধি-বিধানের কোনো সমন্বিত আলেখ্য নেই।
ফলে, আমদানি ও রপ্তানিকারক এবং বিদেশগামী ও প্রত্যাগত যাত্রীদের সর্বদা অনিশ্চিত বাস্তবতার মাঝে থাকতে হয়। একই সাথে, ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থা যদিও সঠিক সেবা প্রদান করে থাকে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আইন বা বিধানের সঠিক নির্দেশনা জানা ছাড়াই কাজ করে যায়। মূল অসুবিধায় পড়ে যান ঐ সকল নবীন উদ্যোক্তা বা পেশাদার ব্যক্তিবর্গ, যারা এই কাজে নতুন করে যুক্ত হন এবং কাজ শিখতে চেষ্টা করেন। তাদের জন্য কোনো সহজ সমাধান নেই। এই বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে ‘মাস্টার অব ফরেন এক্সচেঞ্জ; বইটি লেখা হয়েছে। লেখকের সাহিত্যিক দক্ষতার অভাবে বইটির গদ্যরূপ বা বর্ণনাশৈলী আকর্ষণীয় হয়নি বটে, তবে এটি বৈদেশিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন সংক্রান্ত সকল কার্যক্রমের সকল প্রশ্নের সমাধান দেবে মর্মে আমরা প্রত্যাশা করেন।
এ বিষয়ে বইয়ের লেখক মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, ফরেন এক্সচেঞ্জ নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের জন্য বাংলা ভাষায় পরিপূর্ণ কোনো বই নেই। পূর্ণাঙ্গ সমাধানের কোনো বই না থাকায় কাজের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ কাস্টমস ও সিসিআইএন্ডই এর ইস্যুকৃত বিধানাবলি আর ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স এর প্রদত্ত বিবিধ নির্দেশনার আলোকে এদেশে আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করতে পারাটা দুরূহ। ডাইজেস্ট আকারে বৈদেশিক বাণিজ্য, রেমিট্যান্স, বৈদেশিক বিনিয়োগ, বৈদেশিক ইন্স্যুরেন্স, লাগেজ-ব্যাগেজ প্রভৃতি বিষয়ে কোনো সমাধান প্রস্তুত করা হয়নি। এজন্য এ দেশে ফরেন এক্সচেঞ্জ নিয়ে খুব বেশি বিশেষজ্ঞও তৈরি হন না। আমি কাজ করতে গিয়ে ১৮৯৯ সাল থেকে অদ্যাবধি সকল আইন ও বিধান সংগ্রহ করেছি। আমার দীর্ঘ কাজের অভিজ্ঞতা ও আমার অধ্যয়নের মিশেলে এই বইটি লিখতে চেষ্টা করেছি। আশা করি ফরেন এক্সচেঞ্জ নিয়ে যারা কাজ করছেন বা করতে চান এই বই তাদের জন্য সহযোগী হবে। বিশেষ করে ব্যাংক খাতে যারা বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগে কাজ করেন বইটি তাদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
মন্তব্য করুন