১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এক দিনের ব্যবধানে ২০০ টাকা হয়ে যাওয়াকে স্বাভাবিক মনে করছেন না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, দাম বাড়তে তো সময় লাগার কথা। কিন্তু কিছু বাড়তি লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা কোনো নৈতিকতাই রাখলেন না।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করল আর দেশে এক দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেল, এটা ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল আচরণ নয়।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, গতকাল হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ৭০-৮০ টাকা বেড়ে গেছে। এটা অবশ্যই দায়িত্বশীল আচরণ নয়। ব্যবসায়ীদের বুঝতে হবে দেশের জনগণের জন্যই ব্যবসা। লাভ ছাড়া তো ব্যবসা করবেন না। কিন্তু যে পণ্যের মূল্য ১২০ টাকা, এক রাতের মধ্যে তার দাম ২০০ টাকা কীভাবে হয়। ভারত রপ্তানি বন্ধ মাত্র ঘোষণা দিয়েছেন, সে কারণে পরের দিনই দাম বাড়তে পাড়ে না।
তিনি বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে কাস্টমস ডিউটি কমানোর কথা বলি। এটার সঙ্গে জনগণের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়াও রাজনৈতিক একটি বিষয় রয়েছে। এ ছাড়া শিল্পায়নের স্বার্থে কর অব্যাহতির কথা বলি। বাণিজ্যে বিকাশ চাই। ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা বাড়াতে চাই। ২০২৯ সালের পর শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকবে না, তখন ডিউটি শূন্য করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, এনবিআরের সাবেক সদস্য আলমগীর হোসেন, সাবেক সদস্য জামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান শিকদার ও বর্তমান আয়কর নীতির সদস্য ড. সামসউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভ্যাটনীতির সদস্য জাকিয়া সুলতানা। সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যবসায়ীরা হয়রানি ছাড়া ব্যবসা করতে চায়। হয়রানি বন্ধ করেন- ব্যবসায়ীরা ট্যাক্ম ও ভ্যাট দিবে। বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা অনেক এগিয়ে। হয়রানি না করলে ব্যবসায়ীরা এনবিআরের সঙ্গে সবসময় আছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে হয়তো এক থেকে দুই শতাংশ ব্যবসায়ী কর নিয়ে ঝামেলা করে থাকতে পারে। হয়রানি কমিয়ে আনেন, ওটাও থাকবে না।
মাহবুবুল বলেন, কর নেট বাড়াতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে ব্যবসা রয়েছে, সেখানে নজর দিতে হবে। সেখানে এনবিআরকে দিতে হবে। সেক্টরভিত্তিক ইএফডি বসানোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন