নারীদের সামাজিক অবস্থান এবং তাদের প্রতিনিয়ত মুখোমুখি হতে থাকা ‘খারাপ প্রস্তাব’, ধর্ষণ ও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে যখন উদ্বেগ বাড়ছে, তখন এ বিষয়ে নিয়মিত সোচ্চার হতে দেখা গেছে জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনকে।
সম্প্রতি ‘কালবেলা’ ডিজিটালের তারাবেলা অনুষ্ঠানে তিনি সমাজের এই অন্ধকার দিক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন, যা নেটিজেনদের মাঝে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বাঁধন শুধু বিনোদন জগৎ নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরেই মন্দ মানুষের আনাগোনা এবং নারীদের প্রতি তাদের নেতিবাচক আচরণের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
বাঁধন অকপটে স্বীকার করেছেন, তিনি এখনো নিয়মিত এমন ‘খারাপ প্রস্তাব’ পেয়ে থাকেন। তার মতে, এটি শুধু মিডিয়ার মানুষদের সঙ্গেই ঘটে না, বরং আশপাশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও আসে। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘খারাপ প্রস্তাব তো আমরা এখনো পাই। শুধু মিডিয়ার মানুষ থেকে না। আশপাশের মানুষ থেকে। এরকমও হয়েছে আমি আমার বাচ্চার উকিল কেস নিয়ে সেও আমাকে হ্যারাস করেছে।’
এই ধরনের ঘটনাকে তিনি ‘আমাদের প্রতিদিনের লাইফের একটা অংশ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা সমাজের গভীরে প্রোথিত সমস্যাকে নির্দেশ করে।
সমাজের চিন্তাভাবনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বাঁধন উল্লেখ করেন, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় বেড়ে ওঠা একজন নারী বা পুরুষ সেই ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে পারে না। তারা সেটাই চিন্তা করে, যা সমাজ তাদের শিখিয়েছে। তিনি জোর দেন প্রগতিশীল চিন্তার মানুষদের প্রয়োজনীয়তার ওপর। তার মতে, ‘যখন সে আসলে একটা প্রগ্রেসিভ চিন্তার মানুষ হবে সেটা নারী হোক বা পুরুষই হোক, একটা নতুন কিছু করার চিন্তা করবে, সমাজের পরিবর্তনের জন্য কিছু করার চেষ্টা করবে, সেই চেষ্টাওলা মানুষকে বেশি প্রয়োজন।’
নিজের সততা এবং বাবার থেকে পাওয়া অনুপ্রেরণার কথাও বলেন বাঁধন। তিনি মনে করেন, সততার একটি আলাদা শক্তি আছে। বাবার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, তার বাবা ভীষণ সৎ ছিলেন এবং সৎ মানুষদের প্রায়শই বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অভিনেত্রী দেখেছেন তার বাবা সততার কারণে কীভাবে অপমানিত হয়েছেন এবং কর্মক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তবে, এই কষ্টের পরেও মানুষ তাকে যে সম্মান দিয়েছে, বাঁধন সেই সম্মানটুকুই চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দিনশেষে আমাকে যখন কেউ মনে করবে তখন যাতে সে আমাকে ঘৃণার ভরে মনে না করে। সে যাতে আমাকে একটা সম্মান দিয়ে চিন্তা করে যে ও আচ্ছা বাঁধন এরকম।’
মন্তব্য করুন