চট্টগ্রাম ইপিজেডের প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের বন্ধ ঘোষণা করা ৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। পরে পুলিশ ও চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (সিইপিজেড) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে ফিরে যান তারা।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে প্যাসিফিক গ্রুপের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা ইপিজেড এলাকায় তাদের কারখানাগুলোর সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
কাজ বন্ধ রাখা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে প্যাসিফিক জিন্স-১, প্যাসিফিক জিন্স-২, প্যাসিফিক অ্যাটায়ারস, প্যাসিফিক অ্যাক্সেসরিজ, প্যাসিফিক ওয়ারকওয়্যারস, ইউনিভারসেল জিন্স, এইচটি ফ্যাশন ও জিন্স ২০০০।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া কালবেলাকে বলেন, প্যাসিফিকের বিভিন্ন কারখানা শনিবার সকাল থেকে বন্ধ ছিল। সাতশ-আটশ শ্রমিক এসে সকাল থেকে জড়ো হন। পরে পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তারা চলে গেছেন। শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রুপটির ৮টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে মালিক কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) নির্বাহী পরিচালক আবদুস সোবহান কালবেলাকে বলেন, প্যাসিফিকের বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রমিকরা অনেকেই সেটি জানতেন না। তারা গতকাল সকালে কাজে যোগ দিতে আসেন। তারা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানান। পরে শিল্প পুলিশ ও ইপিজেড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তারা চলে গেছেন।
গত ৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম ইপিজেডে অবস্থিত প্যাসিফিক গ্রুপের কিছু শ্রমিক-কর্মচারী পুলিশের হয়রানির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন। ১৪ অক্টোবরও কয়েকটি কারখানায় বিক্ষোভ হয়। পরে ১৫ অক্টোবর সব কারখানায় বিক্ষোভ হয়। তবে কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। বৃহস্পতিবারও সব কারখানায় বিক্ষোভ হয়। এদিন কর্মকর্তাদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে।
কারখানা বন্ধের নোটিশে বলা হয়েছে, কিছু শ্রমিক ১৪ অক্টোবর কাজ বন্ধ করে বেআইনিভাবে কর্মবিরতি পালন করেন। কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন এবং ১৫ ও ১৬ অক্টোবরও বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে শ্রমিকরা নিজেদের মধ্যে মারামারি, কারখানা ভাঙচুর এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আঘাত করেন। কারখানার শ্রমিকদের এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন অনুযায়ী বেআইনি। এ পরিস্থিতিতে এবং শ্রমিকদের বাধার কারণে কারখানা চালু রাখা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের মামলা থেকে অব্যাহতির দাবিতে এক পক্ষ কর্মবিরতি পালন করছিল। তবে আরেক পক্ষ কাজে যোগদান করার জন্য প্রস্তুত ছিল। কর্মবিরতিতে যাওয়া শ্রমিকরা তাদের বাধা দেন। এ অবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়ে দেয়, কাজের পরিবেশ না থাকলে কারখানা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হবে। এরপর দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
মন্তব্য করুন