যথাযোগ্য মর্যাদায় শিল্প খাতের সাহসী উদ্যোক্তা, দেশের অর্থনীতির সফল আইকন, বেসরকারি শিল্পের মহানায়ক, যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হলো আজ। সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে ২০২০ সালের ১৩ জুলাই চির বিদায় নেন একাত্তরের রণাঙ্গনের সাহসী এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। মেধা, মনন, সততা, পরিশ্রম আর সাহসিকতায় গড়ে তোলেন একে একে ৪২টির অধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান এ স্বপ্নবাজ মানুষটি।
১৯৪৬ সালের ৩রা মে ঢাকার দোহারে জন্মগ্রহণ করেন শিল্প খাতের এই সাহসী, অপ্রতিরোধ্য উদ্যোক্তা। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে নুরুল ইসলাম একজন আধুনিক চিন্তার সাহসী পথিকৃৎ। দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ এ কণ্ঠস্বর আমৃত্যু সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলে গেছেন। গত পাঁচ বছরে শিল্পখাতে এবং দেশের বিশেষ প্রয়োজনে তার শূন্যতা উপলব্ধি করেছে এদেশের মানুষ। দেশমাতৃকার প্রয়োজনে অস্ত্র হাতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তেমনি যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য গভীর দেশ প্রেম নিয়ে গড়ে তোলেন তার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন যমুনা গ্রুপ। তারপর সকল বাধা বিপত্তি আর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে গেছেন এ সাহসী উদ্যোক্তা। এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক, আবাসন খাত, ইলেকট্রনিক্স, বস্ত্র, চামড়া, রাসায়নিক, ডিস্টিলারি, বেভারেজ, টয়লেট্রিজ, ওভেন গার্মেন্টস, ডেনিম, মোটরসাইকেল, মিডিয়াসহ যেখানেই হাত দিয়েছেন সেখানেই সফলতার স্বর্ণ শিখরে পৌঁছেছেন কর্মবীর এই মানুষটি।
বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে, দেশের মানুষ স্বাবলম্বী হবে, এটিই নুরুল ইসলাম মনে প্রাণে ধারণ করতেন। দেশ ও দেশের মানুষের প্রয়োজনে তার সকল অর্থ, মেধা ও পরিশ্রম বিনিয়োগ করেছেন। জীবনে কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি।
ব্যাপক কর্মসূচি আর যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হল যমুনা গ্রুপের প্রাণপুরুষ এবং অভিভাবকের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। পবিত্র কোরআন খতম, বনানী কবরস্থানে জিয়ারত, দোয়া মাহফিল, এতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণসহ নানাবিধ কর্মসূচি পালিত হলো যমুনা গ্রুপের প্রধান কার্যালয়সহ অন্যান্য অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে। যমুনা গ্রুপে কর্মরত সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার শুভানুধ্যায়ীরা এই সকল আয়োজনে অংশগ্রহণ করে কিংবদন্তি এই শিল্প উদ্যোক্তার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
মৃত্যু চিরন্তন সত্য। কিন্তু কিছু মানুষের মৃত্যু দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তেমনি একপ্রাণ পুরুষ নুরুল ইসলাম, তার রেখে যাওয়া যাবতীয় কাজ অত্যন্ত দক্ষতা আর সুনিপুণভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তারই পরিবারের যোগ্য উত্তরসূরিরা।
মন্তব্য করুন