ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগের সমাপনী বর্ষের ছাত্র মো. হাসিবুল হাসান (অন্তর) একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।
দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, দুর্বৃত্তরা অন্তরকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে আহত করে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বলয়ের অনেক বাইরে। তারপরও প্রয়াত মো. হাসিবুল হাসান (অন্তর) যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য, তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করার পরেও অন্তরকে তার পরিবার এনাম মেডিকেল হাসপাতাল থেকে তার নিজস্ব এলাকা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অন্তর মৃতুবরণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী জানাজায় অংশগ্রহণ করার জন্য ময়মনসিংহ যায়। এ কাজে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ সহযোগিতা করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গত ৩ নভেম্বর বাদ জুমা প্রয়াত ছাত্র মো. হাসিবুল হাসান অন্তরের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া করা হয়। গত ৪ নভেম্বর বাদ আসর গায়েবানা জানাজা আদায় করা হয়।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম প্রয়াত মো. হাসিবুল হাসানের (অন্তর) স্মরণে বন্ধ রাখা হয়। একই দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং অন্তর হত্যা মামলার আপডেট জানান।
এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা সজাগ হয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ন্যায়বিচার এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করছে। এ পরিস্থিতিতে গতকাল সন্ধ্যায় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমাদের সবাইকে মর্মাহত করেছে।
এ অবস্থায় এলাকার কিছু সন্ত্রাসী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। তারা বিভিন্নভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে নানারকম গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি আরও অশান্ত করার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির মূল লক্ষ্যই নির্ভুলভাবে প্রতিটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করা। যারা এ নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির জন্য দায়ী তাদের খুঁজে বের করা ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এ অবস্থায় সাংবাদিক ভাইদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ তারা যেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো আনভেরিফায়েড পেজের পোস্ট যাচাই-বাছাই না করে সংবাদ পরিবেশনে বিরত থাকেন। একইসঙ্গে গুজবে কান না দিয়ে প্রয়োজনে সঠিক তথ্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংবাদ পরিবেশন করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
মন্তব্য করুন