ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৪, ০২:০৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বাবার পথপানে চেয়ে নিহত কামালের তিন সন্তান

তিন সন্তানকে নিয়ে নিহত কামালের স্ত্রী। ছবি : কালবেলা
তিন সন্তানকে নিয়ে নিহত কামালের স্ত্রী। ছবি : কালবেলা

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন সংঘর্ষে রাজধানীর শাহজাদপুর এলাকায় নিহত হন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই-এর গাড়িচালক কামাল হোসেন সবুজ। ঘটনার পরদিন ২১ জুলাই সকালে ঝালকাঠি সদরের আগরবাড়ি এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে কামাল হোসেনকে দাফন করা হয়।

নিহত কামালের বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নের বালকদিয়া গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মুনসুর হাওলাদারের ছেলে। নিহত কামালের বিবাহিত জীবনে দুই ছেলে ও তিন বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।

নিহত কামালের শ্যালক রিপন হাওলাদার বলেন, গত ২০ জুলাই সকালে বাড্ডার শাহজাদপুর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে নাশতা করতে বের হয়েছিলেন কামাল হোসেন। এ সময় সংঘর্ষ শুরু হলে ঘটনাস্থলেই কামাল নিহত হন। খবর পেয়ে ঢাকায় গিয়ে লাশ নিয়ে বাড়িতে আসি। আমার বোনটি বিধবা হয়ে গেল। ওদের আহাজারি দেখে আমার কান্না ধরে রাখতে পারছি না।

কামাল হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম রানু পরিবারের একমাত্র উপার্জন করা ব্যক্তিকে হারিয়ে এখন দিশেহারা। তিন সন্তান নিয়ে ঝালকাঠি শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। নিহত কামালের অবুঝ ছোট ছেলে বুঝতেই পারছে না সে কী হারিয়েছে।

ঝালকাঠি সদরের আগরবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কামাল হোসেনের অবুঝ ছোট ছেলে বাবার চ্যানেল আইয়ের পরিচয়পত্রটি গলায় ঝুলিয়ে মায়ের পাশে বসে আছে। শিশুটি বারবার বলছে, ‘বাবা ফিরে আসবে।’ অপর দুই ভাইবোন পাশে বসে কান্না করছে। বড় ভাইয়ের বয়স ১৩ বছর, আর ছোট বোনের বয়স মাত্র তিন বছর।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কামাল হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম রানু বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুতে সন্তানদের নিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এই তিন ছেলে মেয়ে এখন এতিম হয়ে গেল! আমি ওদের নিয়ে কোথায় দাঁড়াব, এখন কে ওদের দেখবে? পরিবারে আর কেউ উপার্জনের মানুষ না থাকায় ছেলেমেয়েদের দেখাশোনার কেউ রইল না‌। মেয়েটি বারবার বাবা বাবা বলে কান্না করছে। এখন আমাদের সংসার চালানোর মতো আর কেউ রইল না। বাকি দিনগুলো কীভাবে চলবে ভেবে উঠেতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঝালকাঠি শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতাম। এখন আমাদের থাকার জায়গা নেই। আমরা সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই, যাতে আমি ছেলেমেয়েদের নিয়ে বেঁচে থাকতে পারি।

নিহত কামাল হোসেনের বড় ছেলে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সামিউল ইসলাম বলে, আমার বাবার আয়ে আমাদের তিন ভাইবোনের লেখাপড়ার খরচসহ সংসার চলত‌‌। এখন আমাদের বাবা নেই, আমাদের খরচ চালাবে কে? আমরা অসহায় হয়ে গেলাম।

গত ২০ জুলাই রাতেই কামালের লাশ ঝালকাঠি সদর উপজেলার আগড়বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরদিন ২১ জুলাই সকালে আগরবাড়ি বাজার মসজিদের সামনে জানাজা শেষে সকাল ৯টার দিকে পশ্চিম আগরবাড়ি জুমা কোবা মসজিদের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খাঁচায় ফেরানো হলো মিরপুর চিড়িয়াখানার সিংহটিকে

৮ দলের নয়, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই : জামায়াত আমির

তপশিল-নির্বাচন নিয়ে ইসির সতর্কবার্তা

জামায়াত রাজাকার সৃষ্টি করেছে : কাজী আলাউদ্দিন

ভারত চাইলে নিরবচ্ছিন্ন তেল সরবরাহে প্রস্তুত রাশিয়া : পুতিন

মোবাইলে ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র দেখবেন যেভাবে

মিরপুর চিড়িয়াখানায় যেভাবে খাঁচা থেকে বের হয় সিংহটি

ডাকাতিকালে মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

ত্রুটিপূর্ণ ভবন নির্মাণে রাজউকের দায় আছে : চেয়ারম্যান

ফান্ড পেলে বন্ধ চিনিকল চালু করা হবে : শিল্প উপদেষ্টা 

১০

৮ গোলের ম্যাচে ৭ গোল হজম আর্জেন্টিনার

১১

মাসদাইর কবরস্থান মসজিদে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়ার আয়োজনে মাসুদুজ্জামান

১২

৬১ হাজার টন গম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ ভিড়ল চট্টগ্রামে 

১৩

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, ১০ শিক্ষার্থীসহ দগ্ধ ১৯

১৪

মিরপুর চিড়িয়াখানার খাঁচা থেকে পালাল সিংহ

১৫

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ১২ দলীয় জোট

১৬

ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিট পেল ৪২ দল, বাকি আরও ছয়

১৭

বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

১৮

নভেম্বরের সেরার লড়াইয়ে বাংলাদেশের তাইজুল

১৯

উইগ্রোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন

২০
X