নওগাঁর মান্দায় প্রতিপক্ষের হুমকির মুখে বাড়িতে ফিরতে পারছেন না মুক্তি রানী শীল। গত ২২ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি সপরিবারে মারধরের শিকার হন। এ সময় বাড়িঘর তালাবদ্ধ করে প্রতিপক্ষ তাদের বিতাড়িত করে দেয়। এরপর থেকে প্রতিবন্ধী স্বামী ও শিশুসন্তান নিয়ে ভবঘুরে জীবনযাপন করছেন তিনি।
ভুক্তভোগী মুক্তি রানী শীল মৈনম ইউনিয়নের দুর্গাপুর পালপাড়া গ্রামের ভক্তি রানী শীলের মেয়ে। প্রায় ৩৫ বছর আগে বাবা হরিচরণ শীলের সঙ্গে তার মা ভক্তি রানী শীলের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর থেকে মায়ের সঙ্গে একই বাড়িতে স্বামী-সন্তান নিয়ে বাস করতেন তিনি।
মুক্তি রানী শীল বলেন, ‘মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বাবা হরিচরণ শীল নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার কালিশহর গ্রামে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। এর কিছুদিন পর ভাই নারায়ণ চন্দ্র শীল বসতভিটায় তার অংশের সোয়া ৪ শতাংশ জমি বিলদুবলা গ্রামের গোপেশ্বর মণ্ডলের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে তিনিও বাবার কাছে কালিশহর গ্রামে চলে যান। ছোট বোন জোসনা নারী শীল ধর্মান্তরিত হলে মায়ের দেখাশোনার পুরো দায়িত্ব আমার কাঁধে পড়ে। পরে গোপেশ্বর মণ্ডলের কাছ থেকে ভাই নারায়ণের বিক্রীত জমি মা ভক্তি রানী কিনে নেন এবং পরে মা আমার নামে লিখে দেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ৬ মে মা মারা যান। তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ভাই নারায়ণ চন্দ্র শীল সপরিবারে আমার বাড়িতে আসেন। শ্রাদ্ধ-শান্তি অনুষ্ঠান শেষ হলে মায়ের বসতবাড়ি ও সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করে। এর জেরে গত ২২ জুলাই সন্ধ্যায় তারা বাড়িঘর তালাবদ্ধ করে আমাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়।’
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
মুক্তি নারী শীল অভিযোগ করে বলেন, ‘এ সময় নুরুল্লাবাদ ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলামকেও কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় আমার স্বামী অসিত কুমার মণ্ডল বাদী হয়ে মান্দা থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় আমার ভাই নারায়ণ চন্দ্র শীলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। কিন্তু ভাইয়ের পক্ষ নেওয়া লোকজনের হুমকির কারণে এখন পর্যন্ত বাড়ি ফিরতে পারছি না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা বলেন, ‘ভক্তি রানী শীলের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে নিতে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি তার ছেলে নারায়ণের পক্ষ নিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে। সম্পত্তিগুলো ভক্তি রানী তার মেয়ে মুক্তি রানীকে দানপত্র করে দিয়েছেন। তাই ছেলে নারায়ণ শীল ওই সম্পত্তির অংশ পাবেন না।
প্রতিপক্ষ কারাগারে ও পলাতক থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মান্দা থানার উপপরিদর্শক শামীম হোসেন বলেন, মামলার পর প্রধান আসামি নারায়ণ শীলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। তবে মুক্তি নারী চাইলেই তার বাড়িতে যেতে পারেন। যদি কেউ বাধার সৃষ্টি করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন