কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বন্যায় ভেসে গেছে সুলতানার ঘর, ঠাঁই রেলস্টেশনে

বন্যায় ধসে গেছে বিধবা সুলতানার শেষ সম্বল। ছবি : কালবেলা
বন্যায় ধসে গেছে বিধবা সুলতানার শেষ সম্বল। ছবি : কালবেলা

ভয়াবহ বন্যায় ভেসে গেছে বাসস্থান, কৃষিজমি, মাছের ঘের, গবাদিপশু। দিশেহারা অবস্থায় বাড়িঘর ফেলে প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন মানুষ। ভিটে হারানো কেউ হয়েছে বানভাসি, কারো ঠাঁই হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে কিংবা নিকটস্থ রেলস্টেশনে।

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত অসহায়দের মধ্যে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের ভিটেহারা বিধবা সুলতানা একজন। তার স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তিন মেয়েকে নিয়ে আবাস গড়েছেন রসুলপুর রেলস্টেশনে। বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় একমাত্র আশ্রয়স্থল মাটির ঘরটি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন পার্শ্ববর্তী রেলস্টেশনে। ভেবেছিলেন বন্যার পানি কমলে আবার ফিরবেন সুলতানার শেষ সম্বল স্বামীর ভিটায়।

কিন্তু বিধি বাম, পানি কমে গেছে, যাওয়ার সময় সুলতানার মাটির ঘরটিও নিয়ে গেছে। ফলে পিতৃহারা তিন মেয়েসহ দীর্ঘায়িত হলো রসুলপুর রেলস্টেশনে সুলতানার গন্তব্যহীন যাত্রা।

জানা গেছে, সুলতানার স্বামী আমজাদ হোসেন স্ট্রোক করে দুই বছর আগে মারা গেছেন। বড় মেয়ে রেজওয়ানা তাবাস্সুম তুসমি ২০২২ সালে কুমিল্লা বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ২০২৪ সালে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করেন। সুলতানার মেঝ মেয়ে মারিয়া আফরিন তুহি নবম শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়ে মাজরিয়া আক্তার নিহা স্থানীয় একটা স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

সুলতানা বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে মানুষের কাছে থেকে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে মেয়েদের পড়ালেখা ও সংসার চালাতে হচ্ছে। এখন বন্যার পনিতে আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। স্বামীর স্মৃতি সম্বল বলতে একটা মাত্র মাটির ঘর ছিল। সেখানেই তিন মেয়েকে নিয়ে থাকতাম। সর্বনাশী বন্যায় কেড়ে নেয় আমার স্বামীর শেষ চিহ্নটুকুও। এখন কীভাবে ঘর ঠিক করব? কীভাবে মেয়েদের পড়া লেখা করাব জানি না।

তিনি বলেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মেয়েদেরকে নিয়ে রেলস্টেশনে ছিলাম। এখন পানি কমে গেছে তাও স্টেশনে থাকতে হচ্ছে। আজ ৩৫ দিন ধরে চুলায় আগুন জ্বলে না। প্রতিবেশীদের দেওয়া চিড়ামুড়ি, বিস্কুট, রুটি খেয়েই অধিকাংশ দিন কেটেছে।

সুলতানার বড় মেয়ে তুসমি বলেন, যাযাবরের মতো জীবন যাপন করছি। আজকে এখানে তো কালকে আরেক জায়গায়। সামনে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, জানি না লেখা পড়াটা চালিয়ে যেত পারব কিনা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা ২০২৪
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমাদের আদর্শগত শত্রু বিজেপি, বললেন থালাপতি বিজয়

৩৮ বছরের শিক্ষকতা শেষে অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় প্রধান শিক্ষককে বিদায়

পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নাম হবে গণহত্যাকারী : আসিফ মাহমুদ

নির্বাচনে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে নানা চেষ্টা চলছে : তারেক রহমান

নারী চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পাঁচ বাংলাদেশি ফুটবলার

অধ্যাপক আলী রীয়াজের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

রিজার্ভ বেড়ে ৩০.৮৫ বিলিয়ন ডলারে

জাকসু নির্বাচন, ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নিয়ে আসছে ছাত্রশিবির

ঢাকঢোল পিটিয়ে বেদখলে থাকা জমি উদ্ধার 

‘আর একটা পাথর সরানো হলে জীবন ঝালাপালা করে দেব’

১০

আমাদের দাবি না মানলে নির্বাচন হবে না : জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি

১১

মানুষ ভাত পাচ্ছে না আর উপদেষ্টারা হাঁসের মাংস খুঁজতে বের হচ্ছেন : আলাল

১২

বিচারককে ‘ঘুষ’, বারে আইনজীবীর সদস্যপদ স্থগিত

১৩

ট্রাক প্রতীক নিয়ে নিজ এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন আবু হানিফ 

১৪

শিক্ষককে ছুরি মারা সেই ছাত্রী এখন শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে

১৫

নথি সরিয়ে ১৪৬ কোটি টাকার কর ফাঁকি, কর্মকর্তা বরখাস্ত

১৬

নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রাসঙ্গিকতা

১৭

আগামী সরকারে থাকবেন কিনা জানালেন ড. ইউনূস

১৮

বাঁশের পাতার নিচে মিলল ৩৭ হাজার ঘনফুট সাদাপাথর

১৯

একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে : মির্জা ফখরুল

২০
X