আঞ্চলিক প্রতিনিধি, নেত্রকোণা
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৫ এএম
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বন্যায় নেত্রকোনায় ৬০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলের মাঠের দিকে তাকিয়ে কৃষক। ছবি : কালবেলা
নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলের মাঠের দিকে তাকিয়ে কৃষক। ছবি : কালবেলা

ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো নেত্রকোনায় সৃষ্ট বন্যার পানি অধিকাংশ এলাকা থেকে নেমে গেছে। আর এতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বন্যার রেখে যাওয়া ক্ষতচিহ্ন।

প্লাবিত এলাকার রাস্তাঘাট, ফিসারির মাছ, রোপা আমন, শাকসবজির বাগান ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে এসব এলাকার বাসিন্দারা। আর সরকারি দপ্তরগুলোর দেওয়া তথ্য মতে, এসব খাতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।

এর মধ্যে কৃষি অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, কৃষি ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ ৩১৩ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার বিভাগের ২৫০ কোটি টাকা ও মৎস্য খাতে ক্ষতি ৮ কোটি টাকা। এ ছাড়াও স্থানীয় অনেক উদ্যোক্তা ও বসতবাড়ির সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়নি।

বন্যায় ভুক্তভোগীদের একজন কলমাকান্দা উপজেলার চৈতা গ্রামের সাথী আক্তার। ঢাকায় কর্মজীবী স্বামীর সামান্য সঞ্চয় দিয়ে বহু আশায় শুরু করেছিলেন একটি মুরগির খামার। কিন্তু বিগত বন্যার করাল গ্রাস কেড়ে নিয়েছে সাথী আক্তারের সমস্ত পুঁজি। কেবল খামারই নয় একই সঙ্গে বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে সাথী আক্তারদের ফসলি জমি এবং থাকার ঘর।

নেত্রকোণা কৃষি বিভাগের আওতায় মোট ক্ষতির পরিমাণ ৩১৩ কোটি টাকা, মৎস্য বিভাগের ক্ষতি ৮ কোটি টাকারও বেশি। এসব খাতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা কর্মকর্তারা।

নেত্রকোণা জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বন্যা পরবর্তী অবস্থায় জেলার কৃষি অবস্থার যে তথ্য জানান সে তথ্যমতে নেত্রকোণা জেলায় আবাদকৃত ১ লাখ ৩৫ হাজার হেক্টর রোপা আমনের মধ্যে ২৪ হাজার ৬৬৭ হেক্টর জমি সাম্প্রতিক বন্যায় নিমজ্জিত হয়েছিলে।

অপরদিকে ১ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে শাকসবজির চাষ হলেও এর মধ্যে ১৭৭ হেক্টর জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছিল। তিনি জানান, কৃষি অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী নেত্রকোনা জেলায় ৭৫ হাজার ৬৮০ জন কৃষক এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাজাহান কবীর জানান, এ জেলায় কমপক্ষে ১ হাজার ৭৩০টি চাষের পুকুর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা।

সাধারণ জনগণের গ্রামীণ সড়কগুলো ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলোর প্রধাণ সড়কগুলোতে হয়েছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। কোথাওবা রাস্তার মূল অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে, কোথাও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়কের মূল পথ। জরুরি রোগী পরিবহনসহ সরকারি-বেসরকারি কাজ, এমনকি দৈনন্দিন বাজার ঘাটে পৌঁছাতেও বেগ পেতে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর জনগণের। অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে সড়ক দুর্ঘটনার হারও।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম জানান, প্রায় ২০০ কিমি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা সারিয়ে তুলতে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন পড়বে। এ ছাড়াও এখন পর্যন্ত কিছু রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে আছে। সেসব রাস্তা দৃশ্যমান হলেই পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হবে। অনেক সড়ক দুপাশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, সেগুলো ইতোমধ্যে স্থানীয়ভাবে ভরাটের মাধ্যমে পুনঃসংযোগ করা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা ২০২৪
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২ ঘণ্টায় লিখা হয় ‘তোমার ব্যথায় আমি’ 

এখন থেকে এক ঠিকানায় মিলবে সব নাগরিক সেবা 

পদ্মা সেতুর ইলেট্রনিক টোল সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হলো নগদ

আইইউবিএটি-তে চীনা ভাষা কোর্সের উদ্বোধন

সাকিবের বিরল রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে মিরাজের ইতিহাস

প্লাস্টিকের গৃহসামগ্রী ব্যবহার, বছরে প্রাণহানি সাড়ে ৩ লাখ

মে দিবস উপলক্ষে তারেক রহমানের বাণী 

আধুনিক বিমানবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্য সরকারের : প্রধান উপদেষ্টা

মিরাজ ঝড়ে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ে বধ টাইগারদের  

বিএনপি নেতাকর্মীদের আরও ধৈর্য ধরতে হবে : এ্যানি

১০

প্রাইজবন্ড ড্র, এবার পুরস্কার বিজয়ী যারা

১১

পরবর্তী পোপ হিসেবে নিজেকেই দেখতে চান ট্রাম্প!

১২

‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার একমত হলে করিডোর চালু করতে পারে জাতিসংঘ’

১৩

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েশন ডে উদযাপন

১৪

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও বিএসআরএম যৌথভাবে উদ্বোধন করল বিএসআরএম স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং

১৫

নোয়াখালীতে হত্যা মামলায় বিএডিসির গুদামরক্ষক গ্রেপ্তার

১৬

যুদ্ধজাহাজে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের নির্দেশ কিমের

১৭

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিত

১৮

সর্বোচ্চ সতর্কতা পাকিস্তানের সব বিমানবন্দরে, কী হতে চলেছে

১৯

সৌদিতে ঈদুল আজহার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা

২০
X