মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মানিকগঞ্জে ৯ মাসে কমেছে ৯৭ হেক্টর ফসলি জমি

মানিকগঞ্জে কলকারখানা, নতুন বসতি, নদীভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। ছবি : কালবেলা
মানিকগঞ্জে কলকারখানা, নতুন বসতি, নদীভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। ছবি : কালবেলা

মানিকগঞ্জে কলকারখানা, নতুন বসতি, নদীভাঙনে গত ৯ মাসে কৃষকদের ৯৭ হেক্টর ফসলি জমি কমে গেছে, যা গড়ে প্রতি মাসে ১০ হেক্টরেরও বেশি। এর মধ্যে ৩১০ কৃষক তাদের সম্পূর্ণ কৃষিজমি হারিয়েছেন, যে কারণে এই জেলায় ফসল উৎপাদন দিন দিন কমে যাচ্ছে। চাহিদা থাকায় বাড়ছে কৃষিপণ্যের দাম। গত রোববার দুপুরে কালবেলাকে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জ কৃষি অফিসের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. রবীআহ নূর আহমেদ।

জানা গেছে, নদীমাতৃক ও কৃষিপ্রধান অঞ্চল হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই মানিকগঞ্জ জেলার আলাদা এক গুরুত্ব রয়েছে। এ জেলার কৃষিপণ্য নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ আশপাশের জেলার চাহিদা পূরণ করত। এখন নিজ জেলার কৃষিপণ্যের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। নতুন বসতি, নদীভাঙনসহ স্কয়ার, রিয়ান্ড, চায়না কোম্পানি নামে বিভিন্ন কলকারখানা ফসলি জমিতে বালু ভরাট করছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে মানিকগঞ্জে ফসলি জমি ছিল ৯৯ হাজার ৫৭৬ হেক্টর, যা গত ৯ মাসে কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৪৭৯ হেক্টর জমি। এই ৯ মাসে নদীতে বিলীন হয়েছে ৫০ হেক্টর, বিভিন্ন কোম্পানির নামে বালু ভরাট হয়েছে ৪৪ হেক্টর, নতুন বসতবাড়ি নির্মাণ হয়েছে ৩ হেক্টর ফসলি জমিতে। ২০২৩ সালে এ জেলায় কৃষক ছিলেন ২ লাখ ৬৬ হাজার ১৩ জন। বর্তমানে কমে কৃষক রয়েছেন ২ লাখ ৬৫ হাজার ৭০৩ জন।

ঘিওর উপজেলার ধুলন্ডী গ্রামের দুলাল চন্দ্র সরকার বলেন, স্কয়ার কোম্পানি আমার জমির চারপাশে সব জমি কৃষকদের কাছ থেকে কিনে নেওয়ায় আমার তিন ফসলি ১৮ শতাংশ জমিও বিক্রয় করতে হয়েছে।

হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চপুর ইউনিয়নের কোটকান্দি গ্রামের আশি বছর বয়সী শেখ সোহরাব জানান, আমার বাবা-দাদার বাড়ি ছিল বড়বাহাদুরপুর। সেখানে আমাদের ফসলি ১৩ বিঘা জমি ছিল। সেসব জমি পদ্মায় বিলীন হয়েছে। শেষ সম্বল বসতভিটাটাও নদীতে চলে যায়। এখন কাঞ্চপুর ইউনিয়নে মামার বাড়িতে বসবাস করছি।

ক্যাব ও মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু বলেন, দিন দিন ফসলি জমি কমার কারণে ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে। সে কারণে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কলকারখানা গড়ে তোলার জন্য তিন ফসলি জমি যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে সরকারের নজর রাখাসহ নদী শাসনের দাবি করেন তিনি।

কৃষি অফিসের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. রবীআহ নূর আহমেদ বলেন, পদ্মায় বসতভিটা ভাঙনের কারণে অনেক পরিবার জেলার বিভিন্ন জায়গায় ফসলি জমি ক্রয় করে বাড়িঘর তৈরি করছে। এ ছাড়া কলকারখানার কারণেও ফসলি জমি হারাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা এরই মধ্যে উদ্যোগ নিয়েছি, যেন তিন ফসলি জমিতে আর কেউ কলকারখানাসহ বসতবাড়ি না করতে পারে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শাপলাই হবে এনসিপির নির্বাচনী মার্কা : হাসনাত

সন্দ্বীপে ৭ প্রবাসীর দাফন সম্পন্ন

জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে গৃহবধূর শ্লীলতাহানির অভিযোগ

খাট-বেগুন দিতে চায় ইসি, শাপলায় অনড় এনসিপি

৮৯ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারীর বাড়ি ভাড়া বাড়বে : শিক্ষা মন্ত্রণালয়

টি-টেন লিগে ৩ বাংলাদেশি ক্রিকেটার সতীর্থ হিসেবে যাদের পাবেন

আরেকটি এক-এগারো ছাড়া বাংলাদেশে আ.লীগের ফেরার সুযোগ নেই : রাশেদ

আগুনের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্র : এনসিপি নেতা

খোলা মাঠে বিমানের জরুরি অবতরণ

১০

আমাদের ডিভোর্স হয়নি,অভিমান করেছিলাম: মাহি

১১

ইসির রিমোট কন্ট্রোল আগারগাঁওয়ে নেই : হাসনাত

১২

দুপুরে না খেলে যা হয়

১৩

ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে শরীরের যেসব ক্ষতি হয়

১৪

সহজ ৩ টিপসে আইফোনের চার্জ থাকবে দীর্ঘসময়

১৫

সন্ধ্যার মধ্যে যেসব জেলায় ঝড়বৃষ্টির আভাস

১৬

ট্রেনে কাটা পড়ে দ্বিখণ্ডিত যুবকের দেহ

১৭

রেকর্ড গড়ে গোল্ডেন বুট জিতলেন মেসি

১৮

প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান, কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের

১৯

নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিহার্য : কবি আবদুল হাই

২০
X