

আগামী বছর ভারত-শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রকাশ করেছে আইসিসি, আর সেই তালিকা দেখে ইতিমধ্যেই আলোচনায় টুর্নামেন্টের প্রথম দিনই ভারত–যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচ। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ঘোষিত সূচি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি ৭ তারিখে মুম্বাইয়ে শিরোপাধারী ভারতের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হবে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। এর আগে দিনটি খুলে দেবে পাকিস্তান–নেদারল্যান্ডস লড়াই, আর মাঝখানে থাকছে কলকাতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ–বাংলাদেশের মুখোমুখি লড়াই।
সূচি প্রকাশের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে সেমিফাইনাল ও ফাইনালের বিকল্প ভেন্যু–ব্যবস্থা। বছর শুরুর চুক্তি অনুযায়ী ভারত বা পাকিস্তান কোনো দেশই যদি আয়োজক হিসেবে থাকে, তাহলে তাদের ম্যাচ–অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে নকআউট ভেন্যু পরিবর্তন হতে পারে। পাকিস্তান ফাইনালে উঠলে ফাইনালসহ সেমিফাইনাল খেলবে কলম্বোতে। তারা না উঠলে মার্চ ৮–এর ফাইনাল হবে আহমেদাবাদে। ভারত সেমিতে উঠলে তাদের ম্যাচ মুম্বাইয়ে, পাকিস্তান–ভারত সেমি হলে নির্ধারিত মাঠ– কলম্বো।
গ্রুপ এ: ভারত–পাকিস্তানের ধ্রুপদি লড়াই, সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘গোলমাল’ সম্ভাবনা
ভারত, পাকিস্তান, নামিবিয়া, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্র—গ্রুপ এ তে স্বভাবতই দুই এশিয়ার দল ফেভারিট। তবে গত আসরে পাকিস্তানকে হারানো যুক্তরাষ্ট্র এবারও চমক দিতে পারে বলে সতর্ক ক্রীড়াবিশ্ব। সবচেয়ে আলোচিত ম্যাচ—ভারত–পাকিস্তান—১৫ ফেব্রুয়ারি, কলম্বো।
গ্রুপ বি: কঠিন পরীক্ষায় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা
অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও ওমানকে নিয়ে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই গ্রুপে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। ওপেনিং ম্যাচেই লঙ্কানদের প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ফিরেছে নতুন উদ্যমে। গ্রুপটি যে সহজ নয়, তা সূচিই বলে দেয়।
গ্রুপ সি: ইংল্যান্ড–উইন্ডিজের সঙ্গে লড়াইয়ে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের জন্য গ্রুপ সি–কে বলা হচ্ছে সম্ভাবনা ও পরীক্ষার মিশ্রণ। ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ—উভয়ই দুইবারের চ্যাম্পিয়ন। নেপাল ও বিশ্বকাপ–নবীন ইতালিকেও হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। ৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় বাংলাদেশ শুরু করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
গ্রুপ ডি: সবচেয়ে কঠিন গ্রুপ—দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ড একইসঙ্গে
গত আসরের রানার্স–আপ দক্ষিণ আফ্রিকা, সেমিফাইনালের স্বপ্নছোঁয়া আফগানিস্তান, সবসময় বিপজ্জনক নিউজিল্যান্ড—এই তিন দলকেই ‘গ্রুপ অফ ডেথ’–এর হেডলাইনে রাখা হচ্ছে। কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থাকলেও প্রতিটি ম্যাচই লড়াইয়ে ঠাসা।
সুপার এইট ও নকআউট ধাপ: চিত্র নির্ভর করছে ভারত–পাকিস্তানের অবস্থানের ওপর
গ্রুপপর্ব থেকে প্রতি গ্রুপের দুই দল যাবে সুপার এইটে। সেখান থেকে দুটি সেরা দল যাবে সেমিফাইনালে। নকআউটের সবচেয়ে জটিল দিক—ম্যাচ ভেন্যু নিশ্চিত হচ্ছে দলগত অগ্রগতির ওপর:
সূচি প্রকাশের পরই স্পষ্ট—২০২৬ টি২০ বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে কেবল ক্রিকেটীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার উৎসব না, রাজনৈতিক উত্তাপ, দর্শক–উন্মাদনা, ভেন্যু–পরিবর্তনের জটিলতা—সব মিলিয়ে টুর্নামেন্টটি হবে আলোচিত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনার ভরপুর।
ভারত শিরোপা ধরে রাখতে পারবে? পাকিস্তান কি আবারো ‘চমক’ দেখাবে? বাংলাদেশ কি সুপার এইটে যেতে সক্ষম? সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে ফেব্রুয়ারি–মার্চের ৩৩ দিনের লড়াইয়ে।
মন্তব্য করুন