মৌসুমি ফল তরমুজ। সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু বছরের ৯ মাসজুড়ে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে দেখা মিলছে বাহারি তরমুজের। অসময়ের এই তরমুজ চাষে আগ্রহ তৈরি হয়েছে কৃষকদের মাঝে।
ক্ষেতলালের হাটশহর কর্ণপাড়া এলাকার তরমুজ চাষিরা বলছেন, মাচায় তরমুজ চাষ শীত মৌসুম ছাড়া বছরের ৯ মাসজুড়ে করা যায়। এই ফসল লাভজনক হওয়ায় তাদের মধ্যে বেড়েছে আগ্রহ। এতে তরমুজ চাষ প্রতি বছরই বাড়ছে। এবার ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা খুশিতে রয়েছেন।
আরও পড়ুন : গরমে ফলের ভালো-মন্দ
এবার তারা জমিতে কয়েক জাতের তরমুজ আবাদ করেছে। উপরে হলুদ ভেতরে লাল এই তরমুজকে তৃপ্তি ও মধুমালা বলে। উপরে ডোরাকাটা গাঢ় সবুজ, ভেতরে মাল্টা কালার এটি ইয়েলো বার্ড, আরেকটার নাম অনুভব। সুপার কিং নামেরও তরমুজ আছে। এই তরমুজ খেতেও সুস্বাদু, দামও ভালো। এখন এক হাজার ৭০০ টাকা দরে প্রতি মণ তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।
তরমুজ চাষি সাগর চন্দ্র বলেন, আমার ৩৩ শতাংশ জমি অর্থাৎ ১ বিঘা। আমার প্রথম দফায় খরচা হইছে ৫০ হাজার, বিক্রি করেছি প্রথম দফায় হলো ৬০ হাজার অর্থাৎ আমার তবিলটা (মূলধন) উঠে আসছে। আর এখন দ্বিতীয় চালানে খরচ হইছে ২০ হাজার, সম্ভবত বিক্রি হবে ১ লাখ।
চাষি কালীচরণ বলেন, এই তরমুজ চাষ করে মোটামুটি আমি খুব স্বাবলম্বী হয়েছি এবং হওয়ার আরও চিন্তা ভাবনা করতেছি। যাই হোক মোটামুটি খুবই ভালো লাগতেছে। আমাদের দেখাদেখি আরও দুই/চারজন কৃষক উদ্যোগী এই তরমুজ চাষ করার জন্য। তাদের আমরাও সহযোগিতার পাশাপাশি বলতেছি, আপনারা এটা চাষ করেন ভালো হবে।
তরমুজ চাষি অনিল চন্দ্র বলেন, সুপার কিং, অনুভব আর এক প্যাকেট বীচি লাগাইছি ইয়লোবাট। আমি ৫৮ শতাংশ জমি লাগাইছি। প্রথম অবস্থায় ৯০ থেকে ৯৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফল বিক্রি করেছি দেড় লাখ টাকা। এই চালানে আবার ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, আশা করা যায় দেড় লাখ টাকার ফল বিক্রি হবেই।
কৃষি অফিসের সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষক অনিল আরও বলেন, কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করে। কৃষি অফিস থেকে এসে অনেক পরামর্শ দিয়ে যায়। এবার আমি কিছু সার এবং মালতিং পেপার পাইছি, ওষুধও কিছুটা পাইছি। কৃষি অফিস থেকে অল্প সুদে যদি আমাদের ঋণ দেয়, তাহলে আমরা আরও কিছুটা ফসল করতাম।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মামুন অর রশীদ কালবেলাকে বলেন, এবার এই উপজেলায় ৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন চাষিরা। লাভজনক এই তরমুজ চাষে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন কৃষি উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন