ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সন্তানকে যেন হাত পাততে না হয়, আর্তনাদ অন্তঃসত্ত্বা সুমির

আন্দোলনে নিহত সেলিমের স্ত্রী সুমি। ছবি : সংগৃহীত
আন্দোলনে নিহত সেলিমের স্ত্রী সুমি। ছবি : সংগৃহীত

‘আমার সন্তানকে যেন কারো কাছে হাত পাততে না হয়। আমার স্বামী শহীদ হয়েছেন, তার স্মৃতি হিসেবে এ সন্তান থাকবে। আমি যতদিন বাঁচবো, শহীদ সেলিমের স্ত্রী হিসেবে বাঁচবো। সন্তানকেও তার পরিচয়ে বড় করবো’, কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমনটাই বলছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত সেলিম তালুকদার রমজানের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সুমি।

রোববার (২৪ নভেম্বর) পরিবারের খোঁজখবর নিতে নিহত সেলিমের বাড়িতে গেলে সুমি আরও বলেন, ‘যদি সরকারিভাবে আমার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে পরিবার নিয়ে আমি ভালোভাবে বাঁচতে পারব। কারো অবহেলা সইতে হবে না।’

তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সেলিম ছিলেন মেঝো। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। গত ১৮ জুলাই কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন। ১৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৩১ জুলাই রাতে তার মৃত্যু হয়।

নিহত সেলিমের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা শহরের টিঅ্যান্ডটি এলাকায়। তিনি নারায়ণগঞ্জের মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং মিলস লিমিটেডের সহকারী মার্চেন্ডাইজার পদে চাকরি করতেন।

মারা যাওয়ার এক বছর আগে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকার মতিউর রহমান চুন্নুর মেয়ে সুমিকে বিয়ে করেন সেলিম। মারা যাওয়ার ৪ দিন পর সুমি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা করিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন অন্তঃসত্ত্বা তিনি। বর্তমানে তিনি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

সেলিম তালুকদারের মা সেলিনা বেগম কালবেলাকে বলেন, মা-বাবার সামনে তার সন্তানের মৃত্যু পৃথিবীতে এরচেয়ে দুঃখ-কষ্টের আর কিছু হতে পারে না। আমার যা সহায়সম্বল ছিল সবকিছু দিয়ে ছেলেকে ভার্সিটিতে লেখাপড়া করিয়েছি। আমার ছেলের আয়ে আমাদের সংসার চলত। এখন আমরা বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছি, আমাদের সংসার কে চালাবে। আমার ছেলের মৃত্যুর পরে আমরা জানতে পারি ছেলের বউ অন্তঃসত্ত্বা। তার অনাগত সন্তানকে দেখে যেতে পারল না। আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রায় ১৮ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মানুষের কাছ থেকে ধার নেওয়া। সে টাকার সব এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। আমরা চাই আমার ছেলেকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হোক।

সেলিমের বাবা সুলতান তালুকদার কালবেলাকে জানান, ঘটনার দিন বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে রওনা দিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছলে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে সে। এ সময় মাথা, বুক ও পিঠে গুলি লাগে তার। ফুসফুসেও গুলি লাগে। সেলিমের মোবাইল ফোন থেকে কল করে এক তরুণ গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা আমাদের জানায়। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। চার দিন বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে শেষে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পাকিস্তানের হুমকির পর ‘অগ্নি ৫’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ভারত

সরকারি সফরে চীন গেলেন সেনাপ্রধান 

সাগরে ভাসমান ১৩ জেলে উদ্ধার, নিখোঁজ ৬

হবিগঞ্জে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে ভয়াবহ আগুন

অ্যাপলের আগে সারপ্রাইজ ‍দিল গুগল

ভয়াবহ আগুনে তুলার মিল পুড়ে ছাই

২১ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে বজ্রবৃষ্টি

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকার উল্টে নিহত ৩

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১০

২১ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

১১

৪ দিনের সফরে ঢাকায় পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী

১২

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাড়ল বাস ভাড়া

১৩

পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গড়ে তোলা হবে ক্লিন সিটি : চসিক মেয়র

১৪

জুলাই সনদে মিত্রদের ‘কাছাকাছি মতামত’ দেওয়ার পরামর্শ বিএনপির

১৫

সন্তানকে বাঁচিয়ে প্রাণ দিলেন বাবা

১৬

সৈকতে ফের ভেসে এলো মৃত ইরাবতী ডলফিন

১৭

ইঞ্জিন সংকটে ‘নাজুক’ রেল অপারেশন

১৮

স্পেনে রিয়ালের আর্জেন্টাইন তারকাকে নিয়ে অদ্ভুত বিতর্ক

১৯

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হলেন আবু তাহের

২০
X