হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রতিবেশীর খাবারের আশায় পথ চেয়ে থাকেন ৭৭ বছরের রহিমা

ভূমিহীন রহিমা বেগম। ছবি : কালবেলা
ভূমিহীন রহিমা বেগম। ছবি : কালবেলা

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার ভূমিহীন রহিমা বেগম (৭৭)। বিয়ের কয়েক বছর পর স্বামী বছর উদ্দিন মারা গেলে সেই অভিমানে আর বিয়ের পিঁড়িতে বসেননি তিনি। নিঃসন্তান আর নিঃসঙ্গ জীবন নিয়ে তিস্তা নদীর পাড়ে জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে ঠাঁই হয়েছে ওনার। বয়সের ভারে চোখে ঝাপসা দেখা রহিমা প্রতিদিন সকাল হলেই কেউ খাবার নিয়ে আসবে সেই আশায় পথ চেয়ে বসে থাকেন। এলাকাবাসীর কেউ খাবার দিলে দুমুঠো খেতে পারেন তিনি। তবে মাঝেমধ্যেই অনাহারেই থাকতে হয় বৃদ্ধা রহিমাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সিঙ্গিমারি ইউনিয়নের ধুবনী এলাকায় থাকেন ভূমিহীন রহিমা বেগম। তিস্তা নদীর কোলঘেঁষে প্রতিবেশীর দেওয়া টিন আর পরিত্যক্ত পাটের লাকড়ি দিয়ে তৈরি একটি ঘরে কোনোরকম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।

বিগত সরকার ভূমিহীনদের বসবাসের জন্য ঘর বরাদ্দ দিলেও বৃদ্ধা রহিমার কপালে কিছুই জোটেনি। এলাকার সবার ঘরে বিদ্যুতের বাতি জ্বললেও ওনার ঘরে জ্বলে পুরনো কেরোসিন তেলের কুপি। একটু বাতাস হলেই নিভে যায় কুপির সেই আলো৷ বয়সের ভারে একা চলতে পারেন না তিনি। তাই তো একটি বাঁশের লাঠিতে ভর করে কোনো রকম চলাফেরা করেন।

বৃদ্ধা রহিমার প্রতিবেশী আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অসহায় এ মানুষটি বাড়ি বাড়ি চাল-ডাল সংগ্রহ করে দিনযাপন করছিলেন ৷ পাড়া-প্রতিবেশীদের দেওয়া দুমুঠো খাবারেই ক্ষুধা নিবারণ করেন।’

আরেক প্রতিবেশী রেজাউল করিম বলেন, ‘বহু বছর থেকে নদীর পাড়ে একাই বসবাস করছেন রহিমা। একটু বাতাস হলেই ঝুঁকিতে পড়ে তার ঝুপড়ি ঘর। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেই পানির নিচে তলিয়ে যায় তার ঘর। প্রশাসন যদি রহিমা বেগমের পাশে দাঁড়ায় তাহলে শেষ জীবনটা ভালোভাবে কাটাতে পারবেন।’

বৃদ্ধা রহিমা বেগম বলেন, ‘মোর কাও নাই! বয়স হইছে চৌকে (চোখে) দেখিবার পাং না। মানুষ খাবার দেয় সেই খাবার খেয়া থাকোং, আবার কোনো দিন না খেয়েও থাকোং। সবারে বাড়িত কারেন্ট আছে মোরে বাড়িত নাই। রাইতোত (রাতে) অনেক কষ্টে ব্যারাং। ’

তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যা হলে চাটির (বেড়া) ফাঁক দিয়া বাতাস ঢুকে তখন খুব ঠান্ডা নাগে (লাগে)। ফির বাইসশ্যার (বর্ষাকালে) সময় ঘরত তিস্তার পানি ওঠে। সবাই বোলে সরকারি ঘর পায় মোরে কপালত ঘর নাই। সরকার যদি মোক একটা ঘরের ব্যবস্থা করি দেইল হয় তাইলে উপকার হইল হয়।’

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দুলাল হোসেন বলেন, ‘রহিমা বেগমের বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। খোঁজখবর নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে৷ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে৷’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘তিন মাসের মধ্যে ৬ লেনের কাজ দৃশ্যমান হবে’

শাবিপ্রবির ২৫ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত

ওমরজাইয়ের বোলিং তোপে বিপদে বাংলাদেশ

প্রবীণদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে : টুকু

শুধু বক্তব্যে নয়, বাস্তব কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে বিএনপি মানুষের পাশে রয়েছে : আনোয়ারুজ্জামান

গুম-খুনে জড়িতদের সঙ্গে আপস নেই : আখতার হোসেন

বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান দুলুর

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার

গুম-দুর্নীতি বন্ধে ধানের শীষে ভোট দিন : আশিক

গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণ, ভাইয়ের পর চলে গেল বোনও

১০

ইতিহাস গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল নামিবিয়া

১১

জিয়া পরিবারের ত্যাগ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য : কফিল উদ্দিন

১২

বিএনপিকে ঘায়েল করতে চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে : মির্জা ফখরুল

১৩

‘গুম-খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার প্রকাশ্য ট্রাইব্যুনালে হতে হবে’

১৪

মার্কস অলরাউন্ডার প্রতিযোগিতায় ব্যাপক সাড়া

১৫

নেইমারকে দলে টানতে মরিয়া ইন্টার মায়ামি

১৬

ডিজিএফআই বিলুপ্তের পরিকল্পনা নেই সরকারের : প্রেস সচিব

১৭

বিএনপির মনোনয়ন বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি : সালাউদ্দিন আহমদ

১৮

ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ

১৯

সরকারি তহবিল স্থগিত, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে হাজারো সরকারি কর্মী চাকরিচ্যুত

২০
X