নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আন্দোলনে নিহত রাসেলের পরিবারকে জায়গাসহ ঘর উপহার

আন্দোলনে নিহত রাসেলের মা কুলসুমা আক্তারের হাতে জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়। ছবি : কালবেলা
আন্দোলনে নিহত রাসেলের মা কুলসুমা আক্তারের হাতে জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়। ছবি : কালবেলা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত কাভার্ড ভ্যানের সাহায্যকারী রাসেল মিয়ার (১৯) পরিবারকে জমিসহ ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বারহাট্টার শাসনউড়া মৌজায় ১০ শতক সরকারি জমিতে একটি আধাপাকা ঘর করে দেওয়া হচ্ছে।

এ উপলক্ষে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে তার মা কুলসুমা আক্তারের হাতে জমির দলিল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ঘর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেন, জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান, বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার, নিহতের মা কুলসুমা আক্তার, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদর উপজেলার ফাহিম পাঠান প্রমুখ।

নিহত রাসেল মিয়া নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের সুসং ডহরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ওই গ্রামের মো. মুন্সী মিয়া ও কুলসুমা আক্তার দম্পতির তৃতীয় সন্তান। গাজীপুরের মাওনায় মোরগবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান গাড়িতে সাহায্যকারী ছিলেন রাসেল মিয়া।

স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন রাসেল মিয়া পরিবারের অভাব দূর করতে কিশোর বয়স থেকেই কাজে যোগ দেন। তার আয়েই চলতো চার সদস্যের পরিবার। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট গুলিতে নিহত হন তিনি। নিজেদের ভিটেমাটি না থাকায়, রাসেলের লাশ দাফন করা হয় তার চাচার জমিতে।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে রাসেলের পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে প্রশাসন। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগদ ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

এছাড়া বুধবার বিকেল ১০ শতক জমিসহ প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে একটি আধাপাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। পাশাপাশি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় কমিশনারের তহবিল থেকে নগদ এক লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।

রাসেলের মা কুলসুমা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলেকে হারিয়েছি। তাকে আর কখনো ফিরে পাবো না। সে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, এটা আমার গর্ব। আমি চাই, আমার ছেলেসহ অন্যদের যারা শহীদ করেছে তাদের যেন বিচার করা হয়। আমার আরেক ছেলে আছে তাকে যেন একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। আমারে জমি ও ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়াতে প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, আন্দোলনে নিহত রাসেলের পরিবারের দুরবস্থার বিষয়টি জেনে তার পরিবারের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি কমিশনার স্যারের পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ টাকাসহ পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হবে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেত্রকোনায় যে ১৭ জন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে রাসেল মিয়ার পরিবারটি হত দরিদ্র। তাদের নিজস্ব কোনো জমি-ঘর না থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ শতক জমি ও একটি আধা পাকা ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।’

নিহত রাসেলের ছবি ও ঘর নির্মাণের ছবি

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৯ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

দ্বিতীয় দিনেও যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল!

মাঝরাতে মোহাম্মদপুরে গাড়ির গ্যারেজে আগুন

জাহানারার অভিযোগ তদন্তে বিসিবির তিন সদস্যের কমিটি গঠন

ঢাকার নতুন ডিসি শফিউল আলম

দেশের ১৫ জেলায় নতুন ডিসি

১৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য কড়া সিদ্ধান্ত ডেনমার্কের

নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে দেশে আবারও বিপ্লব ঘটবে : সরোয়ার

আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না : মির্জা ফখরুল

বিএনপিতে চাঁদাবাজ-জুলুমবাজদের স্থান নেই : নয়ন

১০

সৌদি প্রো লিগে রোনালদোর নতুন ইতিহাস

১১

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাত নেতাকর্মী আটক

১২

‘মুলা তোলার আগেই সব শেষ, জমিতে পানি আর পানি’

১৩

অবশেষে থামল বায়ার্ন

১৪

আইফোন ১৮ প্রো সিরিজের তথ্য ফাঁস, যেসব পরিবর্তন আনছে অ্যাপল

১৫

মার্কস অলরাউন্ডার প্রতিযোগিতা নয়, প্রতিভা-মেধা বিকাশের প্ল্যাটফর্ম

১৬

দিনাজপুরে খালেদা জিয়ার আসনে প্রার্থী দেব না : নুর

১৭

তারেক রহমানের সঙ্গে জুলাই শহীদ পরিবারের সাক্ষাৎ, বিএনপির সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয়

১৮

কাজাখস্তান তো ইসরায়েলের ‘ব্যবহৃত মাল’ : ফিলিস্তিনি নেতা

১৯

বগুড়ায় যাচ্ছেন মীর স্নিগ্ধ

২০
X