ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নতুন জাতের ধান চাষে বিঘাপ্রতি লাভ ৭৫ হাজার টাকা

নতুন জাতের ধান চাষ
ব্রি-১০৮ ধান চাষে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন শৌখিন ধান চাষি মোস্তফা হাসান। ছবি : কালবেলা 

চলতি বোরো মৌসুমে চাষি মোস্তফা হাসান চার বিঘা জমিতে মাত্র ২১ কেজি বীজ লাগিয়ে ২২১ মণ ধান উৎপাদন করেছেন। যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা! বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে সোনালি বর্ণের এই ধান।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক জাত ব্রি-১০৮ ধান চাষে এ অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন উপজেলার শৌখিন এই চাষি।

ইউটিউবের মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে কৃষক মোস্তফা হাসান শেরপুর থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে ২১ কেজি বীজ ধান সংগ্রহ করেন। চার বিঘা জমিতে কিষান খরচ, জমি চাষ, সার ওষুধ ও সেচ খরচ মিলে তার প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অধিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও খরা সহিষ্ণু হওয়ায় বীজতলা থেকে শুরু করে ধান পাকা পর্যন্ত তার এই খরচ হয়েছে বলে জানান। সার ব্যবস্থাপনা কম লাগায় ও বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় অধিক লাভের আশা প্রকাশ করেন। জানুয়ারিতে রোপণ করা ধান ইতোমধ্যে পেকে গেছে। এক শতক জমির ধান নমুনা কর্তনে ৪৫ কেজি ধান পেয়েছেন। মাঠপর্যায়ে প্রতি মণ ধানের মূল্য ১ হাজার ৬০০ টাকা বলে তিনি জানান। ২/১ দিনের মধ্যে বাকি ধান কাটা হবে বলে জানান মোস্তফা হাসান।

ইতোমধ্যে ফকিরহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বীজের জন্য ২০ মণ ধানের চাহিদার কথা জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন।

রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলার বাহিরদিয়া ব্লকে কৃষক মোস্তফা হাসানের ধানক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, আশেপাশের অনেক কৃষক আগ্রহ নিয়ে ধান দেখতে এসেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাসহ কৃষি বিভাগের লোকজন কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন।

উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা নয়ন সেন বলেন, সোনালি রঙের ব্রি-১০৮ জাতের ধানটি এই উপজেলায় প্রথম চাষ হয়েছে। সম্ভবত জেলায়ও প্রথম হবে। এ ধানের চাল মাঝারি লম্বা ও চিকন। ভাত ঝরঝরে ও সুস্বাদু হওয়ায় উচ্চ মূল্যের জিরা ধানের বিকল্প হিসেবে উদ্ভাবন করা হয়েছে। একদিকে উৎপাদন খরচ কম, অন্যদিকে অধিক দামের কারণে ইতোমধ্যে ধানটির প্রতি ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে।

কৃষক মোস্তফা হাসান ও ক্ষেত মজুর রহমত ফকির জানান, ৪ বিঘা ৫ শতক জমিতে ব্রি-১০৮ ধান চাষের সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা লাভ হবে। এ অঞ্চলে প্রথম চাষেই সাফল্য পাওয়ায় অনেক চাষি এটি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করতে চান তিনি। কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শ ও কারিগরি সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ব্রি-১০৮ হলো বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের আবিষ্কৃত সর্বাধুনিক জাতের ধান। এ ধানটি অন্যান্য জাতের তুলনায় বেশি উৎপাদন হয়। প্রতি গোছায় গড় কুশির সংখ্যা ১৬/১৭টি। দানার পুষ্টতা শতকরা ৮৮.৬ ভাগ। চালে প্রটিনের পরিমাণ ৮.৮ ভাগ যা অন্যান্য চালের তুলনায় বেশি স্বাস্থ্য সম্মত।

উপজেলার অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ধানটি ছড়িতে দিতে এই ক্ষেত থেকে সরকারিভাবে বীজ সংগ্রহের পরিকল্পনার কথা জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘পথ হারিয়ে ফেলেছেন’ নেতানিয়াহু

ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র ওরেশনিক নিয়ে নামছে বেলারুশ-রাশিয়া

ফুটবল খেলা কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র নিহত

সর্বপ্রথম কী সৃষ্টি করেছিলেন আল্লাহ তায়ালা

চার বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস 

সারা দেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ আজ

ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনে চাকরি, আবেদন করবেন যেভাবে

ছেলে মাদকাসক্ত, অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশে দিলেন মা

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা

নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ভাবনায় ক্ষুব্ধ জর্ডান

১০

১৪ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১১

৩ দিনব্যাপী হজ ও ওমরাহ মেলা শুরু আজ

১২

আমাদের ৩ জন শেখ মুজিব রয়েছে : মির্জা গালিব

১৩

আরও গভীর হচ্ছে রাশিয়া-ইরান-চীন-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক

১৪

আজ ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় 

১৫

দুই শিক্ষার্থীসহ ৪ জনের প্রাণহানি, দুই গাড়িতে ছিল না ফিটনেস

১৬

১৪ আগস্ট : টিভিতে আজকের খেলা

১৭

১৪ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৮

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৯

ক্ষমতায় থাকাকালীন আ.লীগ দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে বানিয়েছিল : নীরব

২০
X