কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩০ এএম
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

মুরাদনগরে পুলিশি হয়রানি বন্ধ ও এসপি-ওসির প্রত্যাহার দাবি

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সনাতনী ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের সংবাদ সম্মেলন। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সনাতনী ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের সংবাদ সম্মেলন। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে পুলিশি হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সেখানকার সনাতনী ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের লোকজন। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলা ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত মিথ্যা অপবাদের কারণে কুমিল্লার পুলিশ সুপার, ডিবির ওসি, মুরাদনগর ও বাঙ্গরা থানার ওসির প্রত্যাহার দাবি তাদের।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানান। মুরাদগরের রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা নিরসন ও পুলিশের নির্যাতন থেকে মুরাদনগরের মানুষকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মুরাদনগর উপজেলা সনাতন ধর্মাবলম্বী জনতা।

সংবাদ সম্মেলনে আসার আগে দাউদকান্দি এলাকায় পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং ভাড়া করা বাসের চালককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার অভিযোগ করা হয়। পরে ভুক্তভোগী সনাতনী লোকজন অন্য বাসে করে ঢাকায় আসেন বলে জানান।

লিখিত বক্তব্যে মুরাদনগর পূজা উদযাপন কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক দীন দয়াল পাল বলেন, মুরাদনগরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পক্ষে দুঃখের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে যে, গত সাড়ে ১৫ বছর কথিত সংখ্যালঘু দরদি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বেপরোয়া চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা নিপীড়নের শিকার হয়েছে মুরাদনগরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের পতনের পর সাবেক এমপি ও মন্ত্রী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ ও তার নেতাকর্মীরা পূর্বের ন্যায় মুরাদনগরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ সব জনতার সেবায় নিয়োজিত হন।

তিনি নেতাকর্মীদের দিয়ে আমাদের সব মন্দির ও ঘর-বাড়িতে পাহারা বসিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তার সহযোগিতায় আজও মুরাদনগরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদ জীবনযাপন করছে। বিভিন্নস্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও কায়কোবাদের সহযোগিতায় মুরাদনগরবাসী ছিলাম অক্ষয়। তার নির্দেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রত্যেক মন্দির ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘর-বাড়ি পাহারা দেয়।

দীন দয়াল পাল বলেন, বিগত ৪০ বছর ধরে পূজা উদযাপন, বিয়ে-শাদীসহ বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ সব কিছুতেই কায়কোবাদ মুরাদনগরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশে রয়েছেন। তবে কায়কোবাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মুরাদনগরের সব হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ মানববন্ধন করেছেন। অথচ আওয়ামী লীগের দোসর কথিত ফেসবুক অ্যাক্টিভিস্ট রাজিব আহমেদ, যার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, নারী কেলেঙ্কারিসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে এবং ধর্ষণের দায়ে সিঙ্গাপুরে সাজা খেটেছে। তিনি আমাদের মানববন্ধন কায়কোবাদের টাকায় কেনা লোক দিয়ে হয়েছে বলে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের অপমান করে ফেসবুকে অপপ্রচার করেছে। শুধু তাই নয়, কয়েকজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতার নাম উচ্চারণ করে অকথ্য ও অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করেছে, যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাকস্বাধীনতার জন্য হুমকি।

তিনি বলেন, মুরাদনগরের মানুষসহ কুমিল্লা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও বিভিন্ন উপজেলার মানুষের চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কোম্পানিগঞ্জ গত ১৭ বছর ধরে যানজটে নাকাল ছিল। কিন্তু কায়কোবাদ সেই যানজট নিরসন করে কয়েকটি জেলা ও উপজেলার লাখ লাখ মানুষের কষ্ট লাঘব করেছেন। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, যানজট নিরসনের জন্য নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদের চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে পুলিশে তুলে দেয়।

শ্রমিকরা তার প্রতিবাদে থানার সামনে বিক্ষোভ করে এবং সেদিন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাতভর সালিশ চলে। সেখানেও হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অথচ রাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সালিশে বসে বিষয়টি সমাধান করতে আসা বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দেয় এবং পবিত্র ঈদ ও রমজানজুড়ে পুরো মুরাদনগরে পুলিশ ও ডিবি আতঙ্ক বিরাজ করে। এখনো কুমিল্লার এসপি ও ডিবির হয়রানির শিকার মুরাদনগরের মানুষ। পুলিশের এহেন তৎপরতায় মনে হয় এ যেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসনের প্রতিচ্ছবি।

তিনি বলেন, গত ১৩ এপ্রিল ঢাকায় প্রেস ক্লাবে কায়কোবাদ এবং মুরাদনগর বিএনপির বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খোঁজ নিলেই জানা যাবে এরা বরাবরই মুরাদনগরের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। শুধু জনপ্রিয়তার অপরাধে কায়কোবাদকে দুর্নীতিবাজ এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও শেখ হাসিনা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে দেশান্তর করে। এমনকি তাকে ব্রিক ফিল্ডে পুড়িয়ে হত্যা করার জন্য তার গাড়িতে গুলি করে। এখনো তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের নেতা দুলাল দেবনাথ, নিবাস চন্দ্র ঘোষ, বিপ্লব কুমার সাহা, রঞ্জন রায়, দয়ানন্দ ঠাকুরসহ বেশকিছু সনাতনী মানুষ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু, কেয়ারটেকারকে ঘিরে সন্দেহ

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ

শাহজালাল বিমানবন্দরে অতিরিক্ত নিরাপত্তায় ৬ নির্দেশনা

খালসহ ১০টি জলমহাল উন্মুক্ত করলেন খুলনার জেলা প্রশাসক

৩০ আগস্ট ইতালির প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন

জুলাই শহীদদের স্মৃতি স্মরণে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন

বছর ঘুরে ফিরল সেই জুলাই 

৩৬ জুলাই বিপ্লব ও নির্মম নির্যাতনের মধ্যেও বেঁচে ফেরার গল্প

৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ / এস আলম পরিবারের তিন সদস্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে দুই মামলা

১০

খুবির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকে কটাক্ষের অভিযোগ

১১

রাজশাহীতে ঐতিহাসিক ‘সান্তাল হুল’ দিবস উদযাপন

১২

২৯৫ জন অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ী করল চসিক

১৩

যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেন ইউনূস-রুবিও

১৪

করোনার ‘ভুল রিপোর্ট দিয়ে প্রতারণা’, অতঃপর...

১৫

ইরানে একাধিক ইউরোপীয় নাগরিক গ্রেপ্তার

১৬

ঢাবি শিক্ষার্থী সৌমিকের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

১৭

ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হাবিপ্রবিসাসের অফিসরুম ভাঙচুর

১৮

গাজাবাসীর জন্য বিশেষ ভিসা চালু করতে স্টারমারকে ব্রিটিশ এমপিদের চিঠি

১৯

পাবিপ্রবিতে শিক্ষাবৃত্তি ও গবেষণা প্রণোদনা প্রদান

২০
X