বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দরিদ্র গৃহহীন মানুষের নিজ বসতভিটায় বিশেষ আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
২০২৪ সালের বন্যায় কুমিল্লায় ক্ষতিগ্রস্ত গৃহহীনদের ৩০০টি ঘর হস্তান্তর করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক বিশেষ আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে কুমিল্লা জেলায় নির্মিত ৭০টি ঘর উদ্বোধন করা হয়।
জেলার বুড়িচংয়ে ২৯, ব্রাহ্মণপাড়ায় ১০, সদর দক্ষিণে ০৬, চৌদ্দগ্রামে ১০, মনোহরগঞ্জে ১০ ও নাঙ্গলকোটে ০৫ টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশন এসব গৃহনির্মাণ বাস্তবায়ন করে।
ভার্চুয়ালি রাজধানী ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সঙ্গে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গোলপাশা ইউনিয়নের কোমাল্লা গ্রামের উপকারভোগী মো. আলম মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে অনুষ্ঠানটি সংযুক্ত হয়।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আরও যুক্ত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীরপ্রতিক ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকারুজ্জামান।
বন্যা দুর্গতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘গত বছরের বন্যায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা আমরা বুঝতে পেরেছি বন্যা শেষ হবার পর। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কুমিল্লা নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের হিসেবে আমাদের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো যে দায়িত্ব ছিল আমরা তা পালন করেছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গৃহহীনদের এসব ঘর তৈরি করে দিয়েছে, তারাসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
অনুষ্ঠানের অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন, আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলামসহ অন্যরা।
কুমিল্লা প্রান্তে বুড়িচং উপজেলার মিথিলাপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের হাতে নতুন ঘরের চাবি তুলে দেন জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার, ৪৪ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এনামুল হক, ২৩ বীরের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহমুদুল হাসানসহ অন্যান্যরা।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার উপহার পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে ওঠেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ১০ উপকারভোগী। উপকারভোগীরা বলেন, বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়ি। এরই মধ্যে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর উপহার দেবেন মর্মে খবর পাই। আজ ঘরগুলো পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এখন নির্ভয় আমরা নতুন ঘরে ঘুমাবো।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় প্রধান উপদেষ্টার আবাসন প্রকল্পের ঘর উপহার পাওয়া উপকারভোগীরা হলেন- ঘোলপাশা ইউনিয়নের উজানমুড়ী গ্রামের মানছুরা বেগম, রাজেন্দ্রপুর গ্রামের জাফর আহম্মদ, কোমাল্লা গ্রামের মো. আলম, রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের নাছিমা বেগম, গুণবতীর আকদিয়া গ্রামের শাহ আলম, কালিকাপুরের কিং ছুপুয়া গ্রামের আবুল হাশেম, পৌরসভার নাটাপাড়া গ্রামের খোরশেদ আলম, বাতিসার সোনাপুর গ্রামের আব্দুল জলিল, জগন্নাথ দিঘীর বরদৈন গ্রামের রহিমা বেগম, নারায়ণকরা গ্রামের কুলছুমা বেগম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ৫ সিগন্যাল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. খবির হোসেন তালুকদার, ৪৪ পদাতিক ব্রিগ্রেডের মেজর আদম আল ফারুক, চৌদ্দগ্রাম আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন মো. বোরহান উদ্দিন, কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদ চৌধুরী, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল হোসেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সরওয়ার লীমা, চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে কুমিল্লার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা থেকে আসা উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন