কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ : ০১ মে ২০২৫, ০৬:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জিআই স্বীকৃতি পেল কুমিল্লার খাদি

কুমিল্লার খাদি কাপড়ের দোকান। ছবি : কালবেলা
কুমিল্লার খাদি কাপড়ের দোকান। ছবি : কালবেলা

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক অনুষ্ঠানে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেই মৃৎশিল্পও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে আশাবাদী কুমিল্লার মানুষ।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান রয়েছে। শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া।

১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা ড.আখতার হামিদ খান। এরপর অনেকটাই অভিভাবক হারা এসব কুটিরশিল্প পণ্য। ব্যবসায়ীরাই টিকিয়ে রেখেছেন এসব পণ্য, আধুনিকতার ছোঁয়ায়।

জানা যায়, গত বছরের ৩১ মার্চ খাদির জিআই স্বীকৃতির প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসন। বুধবার ঢাকার ওই অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টার কাছে ২৪টি পণ্যের জিআই স্বীকৃতি সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত ৫৫টি পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

কুমিল্লা খাদি ঘরের মালিক ও প্রবীনতম খাদি ব্যবসায়ী প্রদীপ রাহা কান্তি বলেন, এই স্বীকৃতির মাধ্যমে আশা করা যায় কঠিন সংগ্রামে টিকে থাকা কুমিল্লার খাদি বাণিজ্যিকভাবে সফলতা পাবে। রাষ্ট্র এই শিল্পের প্রসারে কাজ করবে।

সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সাবেক সভাপতি শাহ মো. আলমগীর খান বলেন, কুমিল্লার খাদির একটি রাজনৈতিক চেতনা রয়েছে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের একটি স্বদেশি পণ্য এই খাদি। যার ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রয়েছে। এই স্বীকৃতি কুমিল্লাবাসী হিসেবে আমাদের আনন্দিত করে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এ ভোগান্তির শেষ কোথায়

মেঘনায় মালবাহী ট্রলারডুবি

ছাত্রলীগ-শ্রমিকলীগের কাজে নয়ছয়, তুলে নিলেন দেড় কোটি টাকা

‘আমরা ফজরের নামাজের পর হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, কিন্তু...

বাংলাদেশকে ১৩ হাজার কোটি টাকা বাজেট সহায়তা দিচ্ছে জাপান  

প্রবল বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে হালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ

জাপান-বাংলাদেশের যৌথ বিবৃতি

গোসলের পর অজু করতে হবে কি না, যা আছে কোরআন হাদিসে

জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক  

এবার হজে কী চমক রাখছে সৌদি আরব

১০

‘বন্যা এলেই বেড়িবাঁধের কথা মনে পড়ে’

১১

স্থল গভীর নিম্নচাপ চলছে, পাঁচ বিভাগে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস

১২

ছাত্রশিবিরের হাত ধরে আবারও সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু : গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট

১৩

কঠোর ট্রাম্প / মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা

১৪

৩০ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৫

৩০ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৬

ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

১৭

চাঁদা না দেওয়ায় বিএনপি নেতার হাত-পা ভাঙলেন ছাত্রদল নেতা

১৮

আজ মিলবে ট্রেনের ৯ জুনের ফিরতি টিকিট 

১৯

চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে পাহাড়ধস ও জলাবদ্ধতার শঙ্কা

২০
X