ডা. ফয়সাল আহমেদ গাজীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত ৩ মে তাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। তার পোস্টিং পছন্দ হয়নি, তাই আসেন না হাসপাতালে। মানবিক কারণ দাঁড় করিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) বরাবর বদলির আবেদনও করেছেন।
শিল্পাঞ্চল হওয়ায় শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। ফলে চিকিৎসক সংকটে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এর মাঝে নতুন যোগদানকারী এ চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকায় সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মে ফয়সাল আহমেদ চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু এরপর থেকে তিনি আর হাসপাতালে আসেননি। গত ৭, ১২ ও ১৮ মে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে শোকজ করা হয়। তিন দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও তিনি কোনো উত্তরও দেননি। উল্টো আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে খুদেবার্তা পাঠিয়ে ‘যা করার তা করেন’ বলে হুমকিও দেন। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক রোগী আসে, ফলে চিকিৎসক সংকটে আমাদের সমস্যা হয়। একজন চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকলে রোগীদের দুর্ভোগ আরও বাড়ে। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাকে তিনবার শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনো শোকজেরই জবাব দেননি।
অভিযুক্ত চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদ কালবেলাকে বলেন, আগে ছিলাম গাজীপুর সদর উপজেলায়। আমাকে কোনো কারণ ছাড়াই ধাক্কা দিয়ে শ্রীপুরে পাঠানো হয়েছে। জয়েন করেছি আমি; কিন্তু আমার ঘাড়ে একটু সমস্যা আছে। ঘাড়ের হাড় ক্ষয় হয়ে গেছে। সম্প্রতি ব্যথাটা আবার বেড়ে গেছে। এর আগে আমি বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে ছিলাম। সবকিছু মিলিয়ে বিষয়টির জন্য অনুতপ্ত। এ পোস্টিংটা আমার প্রত্যাশা অনুসারে ছিল না। আমি সরকারের কাছে আবেদন করেছি, সরকার আবেদনটি বিবেচনায় নিয়েছে। আশা করি, দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে।
জানতে চাইলে গাজীপুরের সিভিল সার্জন মামুনুর রহমান কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তিনি (ডা. শফিকুল ইসলাম) আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, পোস্টিং তার পছন্দ হয়নি। তিনি চলে যাওয়ার জন্য আবেদন নাকি করেছেন, ডিজি স্যার দেশে নেই। তিনি এলে নাকি অর্ডার হবে। তবে আমরা তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।
মন্তব্য করুন