বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে গত কিছুদিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও এক দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। গোমতীর পানি বাড়ায় কোথাও কোথাও হুমকির মুখে পড়েছে গোমতী চরের ফসল।
এদিকে গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গোমতী তীরবর্তী মানুষসহ নদীর আশপাশের উপজেলা ও ব্রাহ্মণপাড়া এবং বুড়িচং উপজেলার মানুষ বন্যার শঙ্কায় রয়েছে।
সোমবার (০২ জুন ) রাতে কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পানি বৃদ্ধি পেলেও এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোমতী নদীর পানির বিপৎসীমা ১১ দশমিক ৩০ মিটার। এখন গোমতী নদীতে পানি রয়েছে ৭ দশমিক ৩৯ মিটার। এতে বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই।
নদীর পানির উচ্চতাসীমা এখনো বিপৎসীমার ৩ দশমিক ৯১ মিটার নিচে রয়েছে। আশা করা হচ্ছে নতুন করে সংকট তৈরি না হলে আগামী একদিন পানি বৃদ্ধির পর গোমতীর পানি কমতে শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের মনোহরপুর এলাকার গোমতী তীরবর্তী বাসিন্দা আওলাদ হোসেন বলেন, গোমতী নদীর পানি বাড়ায় চরে আবাদ করা আমাদের ফসল নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছি। পানি আরও বাড়লে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।
একই এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘গত সপ্তাহের শেষ দিকে নিম্নচাপের কারণে টানা দুইদিন ভারি বৃষ্টিপাত হয়। এর ফলে গোমতী নদীর পানি বাড়তে থাকে। গত বছর নদীটির বাঁধ ভেঙে আমাদের ফসলসহ ঘরবাড়ি তলিয়ে গিয়ে ছিল। এবারও গোমতীর পানি বাড়তে থাকায় আমরা চিন্তায় পড়ে গেছি।’
উপজেলার মহালক্ষাীপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাসান মোল্লা বলেন, ‘প্রতিদিনই শুনছি গোমতী নদীর পানি বাড়ছে। গত বছরও এভাবে পানি বাড়ছে শুনতে শুনতে ভয়ংকর বন্যা হয়ে গেলে। তাই গোমতীর পানি বাড়ছে শুনলে ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে।’
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান কালবেলাকে বলেন, গত সপ্তাহে হয়ে যাওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বন্যার আশঙ্কা নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী এক দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর পানি কমতে শুরু করবে। গোমতী তীরবর্তী মানুষসহ গোমতীর আশপাশের মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ায় আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিল জেলার ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং উপজেলা। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয় দুই উপজেলায়। সেই ভয়াবহ বন্যার ক্ষতচিহ্ন এখনো রয়েছে দুই উপজেলায়।
মন্তব্য করুন