বর্ষা এলেই পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করে, আর সেই সঙ্গে তীরবর্তী মানুষদের মনে ফিরে আসে চিরচেনা আতঙ্ক- নদীভাঙন। বছরের পর বছর ধরে নদীর তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অসংখ্য পরিবার।
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার পরিবেশ বিরাজ করছে। যদিও এখনো বড় ধরনের ভাঙন শুরু হয়নি, তবে অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই আতঙ্কে দিন পার করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের নুরুদ্দীন সরদার কান্দি, আব্দুল হামিদ জঙ্গির কান্দি, আলেফ সরদার কান্দি ও জব্বার শিকদার কান্দি- এই গ্রামগুলো ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া আকোটের চর ইউনিয়নের শয়তানখালী, ছলেনামা ও আকোটের চর গুচ্ছ গ্রামের প্রায় ১১০টি পরিবার নদী ভাঙনের আতঙ্কে দিন পার করছে।
দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের নুরুদ্দীন সরদারকান্দি গ্রামের এক বাসিন্দারা বলেন, প্রতি বছরই নদীভাঙনের শিকার হচ্ছি। ঘরবাড়ি, ফসলি জমি সব নদীতে চলে যাচ্ছে। আমরা চাই আগেভাগে টেকসই নদী শাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
আকোটের চর ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, এই সময় এলেই আমাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। পানি বাড়লেই ভাঙন শুরু হবে। সরকার আমাদের থাকার জায়গা দিয়েছে, এই ঘরবাড়িই এখন আমাদের শেষ সম্বল। এটাও হারালে আর কিছু থাকবে না।
আকোটের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসলাম বেপারী বলেন, নদীভাঙন এখন আর হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনো দুর্যোগ নয়, এটি একটি বার্ষিক দুর্যোগে রূপ নিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আমরা বারবার জানিয়েছি। তারা এলাকা পরিদর্শনও করেছেন। আশা করছি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা বলেন, নদী ভাঙনের ফলে এখানকার মানুষের জীবনমান উন্নত হচ্ছে না। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় নদী শাসনের টেকসই ব্যবস্থা প্রয়োজন। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন জানান, পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের ঝুঁকিও বাড়ছে। আমরা ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোতে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছি। খুব শিগগিরই টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন