নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

নবীগঞ্জে ১৪৪ ধারা ভেঙে সংঘর্ষ, অ্যাম্বুলেন্স চালক নিহত

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা ভেঙে সংঘর্ষে জড়ায় দুপক্ষ। এতে দেড় শতাধিক লোক আহত হন। ছবি : কালবেলা
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা ভেঙে সংঘর্ষে জড়ায় দুপক্ষ। এতে দেড় শতাধিক লোক আহত হন। ছবি : কালবেলা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভেঙে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় দুপক্ষ। এতে একজন নিহত হন এবং দেড় শতাধিক লোক আহত হন। এসময় অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও অন্তত ১০টি দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে নবীগঞ্জ শহরের মধ্যবাজার, শেরপুর রোড ও হাসপাতাল সড়কজুড়ে শুরু হয় সংঘর্ষ। টানা সাড়ে চার ঘণ্টার ওই সংঘর্ষে শহরজুড়ে সৃষ্টি হয় নৈরাজ্য পরিস্থিতি।

নিহত ব্যক্তির নাম ফারুক মিয়া (৪২)। তিনি পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের আওল মিয়ার ছেলে ও পেশায় একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত প্রায় ২০ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় গত বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের খরচু তালুকদার ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আশাহিদ আলী আশার মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে। এরপর শুক্রবার রাতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে সোমবার দুপুরে নবীগঞ্জ শহরের মধ্যবাজার, শেরপুর রোড ও হাসপাতাল সড়কজুড়ে শুরু হয় সংঘর্ষ।

তিমিরপুর ও চরগাঁও গ্রামের লোকজন শহরে অবস্থান নিতে গেলে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের আনমনু, রাজাবাদ, রাজনগর, কানাইপুর, নোয়াপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে দুপক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে অন্যের ওপর হামলা চালায়। এতে নবীগঞ্জ শহর পরিণত হয় রণক্ষেত্রে।

সংঘাত চলাকালে শহরের ইউনাইটেড প্রাইভেট হাসপাতাল, হোটেল, দোকানপাটসহ অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয় এবং অন্তত ১০টি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিকেল ৪টায় নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেন। এতে শহর ও আশপাশের এলাকায় জনসমাবেশ, মিছিল, জমায়েত, অস্ত্র বহন এবং সংঘাতমূলক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয় মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ১২টা পর্যন্ত।

তবে ১৪৪ ধারা কার্যকর হওয়ার পরও কিছুক্ষণের জন্য সংঘর্ষ চলতে থাকে। পরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ মাঠে রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জিএম কাদেরের সিদ্ধান্ত অবৈধ : আনিসুল ইসলাম

কুয়েতে নতুন ই-ভিসা চালু

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নিয়ে পিএসসির জরুরি নির্দেশনা

১১৯ বার পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন

যুদ্ধে জড়াতে চায় ইসরায়েল, পূর্ণ প্রস্তুতিতে ইরান

মেন্ডিসের শতকে বাংলাদেশের সামনে বড় টার্গেট

সরকারের নির্বাচনী কার্যক্রম কচ্ছপ গতিতে চলছে : লায়ন ফারুক 

নরসিংদীতে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তারের পর যুবদল নেতা বহিষ্কার

ইরানের শীর্ষ কমান্ডারদের হত্যার আগে যেভাবে খোঁজ পেত মোসাদ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের পেটানো সেই ওসিকে বদলি

১০

শহীদদের যথাযথ মর্যাদা দিতে গণতান্ত্রিক সরকার প্রয়োজন : দুদু

১১

ভারতীয় বোলারের সেই বিতর্কিত ডেলিভারিকে বৈধ ঘোষণা এমসিসির

১২

টেকনাফে বৃষ্টি-পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার মানুষ

১৩

প্রকাশিত ফটোকার্ডের সংশোধনী

১৪

ডেল্টা হসপিটালের সাবেক পরিচালক রাশেদা ইসলাম মারা গেছেন

১৫

গাজায় ৫ সেনা নিহত, ইসরায়েলকে আরও কঠোর হুঁশিয়ারি

১৬

ব্যারিস্টার শামীমের নেতৃত্বে আ.লীগের পুনর্বাসন হতে যাচ্ছে : রাশেদ খান

১৭

বিরামহীন বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, জনজীবন বিপর্যস্ত

১৮

ব্রিজের রেলিং ভেঙে বাস খালে, আহত ২৫

১৯

হাওর সুরক্ষায় মাস্টারপ্ল্যান করছে সরকার : পরিবেশ উপদেষ্টা

২০
X