শাহ মো. হেলাল, বালাগঞ্জ (সিলেট)
প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘৮ কোটি টাকার বাঁশের সাঁকো’

প্রকল্পের কাজ শেষ করেই ঠিকাদার উধাও। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণকাজ। ছবি : কালবেলা
প্রকল্পের কাজ শেষ করেই ঠিকাদার উধাও। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণকাজ। ছবি : কালবেলা

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকায় ৮ কোটি টাকার ব্রিজ প্রকল্প আজ এলাকায় পরিণত হয়েছে কৌতুক ও হতাশার প্রতীকে। বছর ঘুরে গেলেও আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় জনগণের ভরসা এখন বাঁশের তৈরি একটি পুরোনো সাঁকো। স্থানীয়রা ক্ষোভের সঙ্গে এর নাম দিয়েছেন—‘৮ কোটি টাকার বাঁশের সাঁকো’!

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর বাংলা বাজার-দনারাম সড়কে বেথরি নদীর উপর একটি আরসিসি ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। বরাদ্দ ধরা হয় ৭ কোটি ৭৮ লাখ ২০ হাজার ২৪৯ টাকা। কাজটি পায় শেরপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধ্রুব মোশারফ (জেবি)। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত।

তবে মাঠের বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। এলজিইডি সূত্র জানায়, প্রকল্পের মাত্র ৪০ শতাংশ কাজ শেষ করেই ঠিকাদার কার্যত উধাও। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণকাজ। অথচ ঠিকাদার বরাদ্দের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ উত্তোলন করে নিয়েছেন।

নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় এলাকাবাসীর চলাচলের একমাত্র পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁশের তৈরি একটি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো। শিশু শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ নারী—সবারই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

বাংলা বাজার এলাকার নাজিম আহমেদ ও তৈমুর আলি, আজিজপুর এলাকার শাহরিয়ার আহমদ খালেদ কালবেলাকে বলেন, অত্র ইউনিয়নের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি ৮ কোটি টাকার ব্রিজ প্রকল্পে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই। মাত্র ৪০ শতাংশ কাজ করে মোটা অঙ্কের বিল তুলে নিয়ে ঠিকাদারের গা ঢাকা দেওয়া শুধু দায়িত্বহীনতা নয়, এটি জনগণের করের টাকায় প্রকাশ্য চুরি। স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিষ্ক্রিয়তা এখানেই প্রশ্নবিদ্ধ।

একদিকে মানুষ চরম দুর্ভোগে, অন্যদিকে চলছে দায়মুক্তির সংস্কৃতি। আমরা চাই—অবিলম্বে জড়িতদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে জনগণের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করা হোক। দুর্নীতির বিরুদ্ধে এখনই সোচ্চার হওয়ার সময়।

পশ্চিম পৈলনপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুজেফর আলী বলেন, ঠিকাদার কাজ ফেলে পালিয়ে গেছেন। বারবার বলার পরও কাজ শুরু হয়নি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার ধ্রুব মোশারফ বলেন, দেশের পটপরিবর্তন ও বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করছি, সুযোগ পেলে আবার কাজ শুরু করব।

এ বিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ঠিকাদারকে বারবার তাগাদা দিয়েও কাজ শুরু করানো যায়নি। চুক্তি বাতিলের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এক দিন পরেই বাড়ল স্বর্ণের দাম

স্পিনারদের হাতে ম্যাচ জেতার সুযোগ দেখছেন হাসান মাহমুদ

আইজিপির সঙ্গে রেড ক্রস প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় মিছিল, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

আরও একটি আকর্ষণীয় ফিচার আনছে হোয়াটসঅ্যাপ, যে সুবিধা পাবেন

দলের সিদ্ধান্তই আমাদের একমাত্র পথনির্দেশনা : মাসুদুজ্জামান মাসুদ

আধা কিমি দৌড়েও প্রাণে বাঁচলেন না ছাত্রদল নেতা

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

ধানমন্ডিতে ককটেল বিস্ফোরণ, মিছিলের চেষ্টাকালে আটক ২

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সাইফুল মজিদের মৃত্যুতে শোক

১০

গোপনে ‘বেলি ড্যান্স’ শিখছেন সৌদি নারীরা

১১

দিল্লির ভয়াবহ বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর স্ট্যাটাস

১২

বিশ্বকাপের প্রথম টিকিট দান করে দিবেন মেক্সিকো প্রেসিডেন্ট

১৩

টিকটকে ভিউ বাড়াতে চান? ব্যবহার করুন এই ১০ হ্যাশট্যাগ 

১৪

শিবিরের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

১৫

শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গুলি করা সেই দুই শুটার গ্রেপ্তার

১৬

তিন-চার দিনের মধ্যেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে পরিষ্কার জানা যাবে : আসিফ নজরুল

১৭

প্রাইভেটকার নিয়ে অটোরিকশা চুরি করেন তারা

১৮

দেশের সব বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতার নির্দেশ

১৯

‘জনগণই পারে নির্বাচনের মাধ্যমে দুই দলের অহংকার চূর্ণ করে দিতে’

২০
X