ফরিদপুরের নিখোঁজের তিন দিন পর উদ্ধার হয়েছে ১১ বছর বয়সী শিশু তামিমের লাশ। ওই শিশু জেলার মধুখালী উপজেলার বড় গোপালদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ওই এলাকার সৌদি প্রবাসী শামীম তালুকদারের ছেলে।
তামিমকে অপহরণের পর মুক্তিপণের দাবিতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছে তার পরিবার। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
তামিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকালে বাড়ির কাজের লোক তুহিন শেখের সঙ্গে তামিম খেলাধুলা করতে বের হয়। এরপর সে আর বাড়ি ফেরেনি। সন্ধ্যার পর পরিবারের পক্ষ থেকে তামিমের খোঁজ শুরু করলে একপর্যায়ে তুহিন শেখের মোবাইল নম্বরে ফোন করা হয়, কিন্তু সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা দেওয়ার প্রস্তুতিও ছিল পরিবারের, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জীবন রক্ষা হয়নি শিশুটির।
মধুখালী থানা পুলিশ জানায়, পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বিশেষ অভিযান চালানো হয়। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাতে মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার বড়গাতি গ্রামের বাসিন্দা তুহিন শেখকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী একই উপজেলার কোরকদি ইউনিয়নের বাঁশপুর গ্রামের একটি জমির আইলে আবর্জনার নিচে চাপা অবস্থায় তামিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগে আরও একজনকে আটক করে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, ঘাতক তুহিন প্রায় এক বছর আগে দিনমজুর হিসেবে নিহত তামিমদের বাড়িতে কাজ করতে এসেছিল। এ সূত্র ধরে এলাকায় পরিচিতি গড়ে তোলে। প্রায় ১৫ দিন আগে আবারও এ গ্রামে এসে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে তোলে এবং ঘটনার দিন তামিমকে নিয়ে বের হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হলে সমাজে অপরাধ আরও বাড়বে। শোকাহত পরিবারও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
এ বিষয়ে মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। মুক্তিপণের দাবিতেই শিশুটিকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। মধুখালী থানা পুলিশ আটক তুহিন শেখসহ দুজনকে ফরিদপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন