ভোরের স্নিগ্ধ আলোয় জলে ভেসে থাকা লাল শাপলার সমাহার যেন প্রকৃতির আঁকা এক লালগালিচা। হালকা বাতাসে দুলতে থাকা শাপলাগুলোতে যুক্ত হয় ভোরের সোনালি কুয়াশা, আর তাতেই সৃষ্টি হয়েছে অপূর্ব এক স্বর্গীয় সৌন্দর্য।
ষড় ঋতুর বাংলাদেশে এখন বইছে শরৎকাল। যদিও শরৎকাল তারপরও বর্ষার স্নিগ্ধতার রেশ এখনো রয়েছে প্রকৃতিতে-খালে-বিলের থৈ থৈ জলের ফুটে থাকা শাপলা ফুলে। শরতের সকালে শুভ্র নীল আকাশে সবে মাত্র উঁকি দিচ্ছে কুসুম সূর্য। সেই সূর্য শাপলার সবুজ পাতা আর লাল পাপড়িতে জমে থাকা শিশিরে ধরা দিয়েছে চিকিমিকি মুক্তা হয়ে। সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতুরপুর গ্রামের শেখ বাড়ির টোডা বিলের লাল শাপলা দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন শত শত দর্শনার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা বিজয়নগর উপজেলা। উপজেলার ছতরপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ জলাশয়টি এখন সর্বজনপ্রিয় ‘লাল শাপলার বিল’ নামে পরিচিত। একসময় এই বিল ছিল মূলত মাছ ধরার ক্ষেত্র, বর্তমানে উপজেলায় টোডা বিলে লাল শাপলায় বর্ণিল সাজে সেজেছে এক অপরূপ সৌন্দর্যে। নতুন পর্যটন স্পষ্ট হিসেবে পরিচিত পেতে যাচ্ছে এ লাল শাপলা বিল। এ বিলে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকৃতি প্রেমী তরুণ-তরুণীরা আসছে।
উপজেলার ছতুরপুর শেখেবাড়ি এলাকার এই টোডা বিল খ্যাতি পাচ্ছে লাল শাপলার বিল নামে। রোদের তাপে নুইয়ে পড়ে বলে ভোরের সূর্য ওঠার আগেই লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন নানা প্রান্তের প্রকৃতিপ্রেমীরা। বিলের পানিতে ভেসে থাকা সবুজ পাতার মধ্যে উঁকি দিচ্ছে লাল শাপলা। যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতি প্রেমীদেরকে। এমন প্রকৃতিতে বর্ষা শেষে শরতের আগমন।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিদিন ভোরে দূর-দূরান্ত থেকে শত শত প্রকৃতি প্রেমীরা ফুটে থাকা লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসছেন ছতুরপুর এলাকার শেখেবাড়ি টোডা বিলে। কেবল সৌন্দর্য উপভোগই নয় এই লাল শাপলা হয়ে উঠেছে প্রান্তিক মানুষের জীবিকার উৎসও। এ বিল থেকে শাপলা ও শালুক আহরণ করে হাট বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে কেউ কেউ। তবে বিলে নৌকা না থাকায় আগত দর্শনার্থীরা বিলে তেমন ঘুরতে পারছে না। পাড় থেকে দাঁড়িয়ে বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা।
দর্শনার্থী আকিব রহমান বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে লাল শাপলা দেখতে এসেছি। এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে। তবে বিলের মধ্যে ঘোরার জন্য নৌকা থাকলে আরও ভালো লাগত।
শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার বলেন, এই বিলে আমি প্রথম এসেছি। এখানকার শাপলা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। বিলের মাঝখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা ভালো হলে আরও দর্শনার্থী আসবে। ছতুরপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম বলেন, আগে মানুষ আসত না। এখন লাল শাপলার জন্য অনেক মানুষ দূর থেকে আসছে। ইচ্ছামতো ছবি তুলছে।
দর্শনার্থী সাদিয়া আক্তার বলেন, বিলের লাল শাপলা দেখে অনেক মুগ্ধ হয়েছি। পুরো বিল যেন লাল হয়ে গেছে। হাজার হাজার লাল শাপলা ফুল ফুটেছে। প্রকৃতি যেন অন্যরকম সাজে সেজেছে। দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে।
মন্তব্য করুন