কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গুম-দুর্নীতি বন্ধে ধানের শীষে ভোট দিন : আশিক

নেতাকর্মীদের বহর নিয়ে বাঁশখালীতে মফিজুর রহমান আশিক। ছবি : কালবেলা
নেতাকর্মীদের বহর নিয়ে বাঁশখালীতে মফিজুর রহমান আশিক। ছবি : কালবেলা

গুম, দুর্নীতি, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিএনপির ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী আসনে) বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মফিজুর রহমান আশিক। যিনি শেখ হাসিনার শাসনামলে দীর্ঘদিন গুম ছিলেন। আশিক বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ৩১ দফার ভিত্তিতে আগামীর রাষ্ট্র পরিচালিত হবে। তারেক রহমানের ৩১ দফার বাস্তবায়ন হলে দেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।

শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে বাঁশখালী উপজেলা সদর ও মিয়ার বাজারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে জনমত গঠন ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে এসব কথা বলেন তিনি।

এদিন বিকেলে বাঁশখালীর প্রবেশদ্বার তৈলারদ্বীপ সেতু থেকে কয়েকশ মোটরবাইকসহ নেতাকর্মীদের বহর নিয়ে বাঁশখালীতে প্রবেশ করেন আশিক। এ সময় বাঁশখালীর বিভিন্ন হাট-বাজার, জনসমাগম স্থলে গিয়ে ধানের শীষে ভোট চান তিনি। পরে নেতাকর্মীরা বাঁশখালীর মিয়ার বাজার থেকে মিছিল সহকারে তাকে বরণ করে নেন। সেখান থেকে তাকে নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা ধানের শীষের পক্ষে মিছিল করেন। পরে মিছিলটি উপজেলা সদর প্রদক্ষিণ করে জলদি কালী বাড়ির সামনে শেষ হয়। সেখানে পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি। পরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে উপজেলা সদরে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করেন তিনি।

গুম ফেরত আশিক তার ওপর নির্যাতনের কথা তুলে ধরে বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করতে গিয়ে দুইবার গুমের শিকার হয়েছি। আয়নাঘরের মতো বীভৎস জায়গায় বন্দি ছিলাম। গুমের পর স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার বাহিনীর নির্মম নির্যাতনে আমার ডান হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে। তারা আমার হাত, কোমর ও হাঁটু ভেঙে দিয়েছিল। আন্দোলন করতে গিয়ে অসংখ্যবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। দুইবার গুম হওয়ার পরও ভাঙা কোমর ও হাঁটু নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম। এই হাসিনার পতনে একটু হলেও আমার অবদান রয়েছে।

আশিক আরও বলেন, আমার গুম হওয়া সময়ে আমাদের নেতা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো আমার পাশে দাঁড়ানোর কারণে দ্বিতীয়বারের মতো জীবন ফিরে পেয়েছিলাম। সিটিসিসি আমাকে গুম করার পর মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। হয়তো আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। সেদিন যদি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো আমার পাশে না দাঁড়াত তাহলে আজ আমার কোনো হদিস থাকত না। এত এত নির্যাতনের পরও ভাঙা কোমর ও হাঁটু নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছি।

পথচারী ও নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র যখন গভীর সংকটে, তখনই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের রূপরেখা ঘোষণা করেন। তা নিঃসন্দেহে এদেশের মানুষের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ৩১ দফা রাজনৈতিক দল বা জোটের কর্মসূচি নয়, এটি দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ঘোষণাপত্র। তাই আমি সব সহযোদ্ধা, জনগণ ও ছাত্রসমাজকে বলব আসুন আমরা সবাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ হই।

তিনি আরও বলেন, বাঁশখালীর প্রভাবশালী সাবেক তিন ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত, বদরু, জসিম হায়দার তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন, ফাঁসির দাবিতে মিছিল করেছেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় বাঁশখালীতে এত বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী, অথচ ওইদিনের ঘটনায় এসব নেতারা কোনো প্রতিবাদ করেননি। এমনকি ৫ আগস্ট পরবর্তী উল্টো তাদের মামলা না দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন তারা। আমি বাঁশখালী বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলতে চাই, আমাদের আবেগ, উৎসাহ, অনুপ্রেরণার নাম হলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমরা যদি তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার সম্মান রক্ষা করতে না পারি তাহলে সেটা হবে দলের সাথে প্রতারণা।

মফিজুর রহমান বলেন, বাঁশখালীতে যে সব আ.লীগ নেতা হত্যা, অত্যাচার, দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ করেছি বাঁশখালীতে ইসলাম নামধারী একটি গুপ্ত সংগঠন প্রভাব বিস্তারের নাম করে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। আমরা তাদের বলবো, বাঁশখালীকে শান্ত রাখুন। যদি বাঁশখালীতে কোনো বিএনপি নেতাকর্মীর ওপর হামলা হয় তাহলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। বিএনপির সে শক্তি-সামর্থ্য রয়েছে।

তিনি বলেন, আমাকে যদি বাঁশখালীতে ধানের শীষের মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে আমি বাঁশখালীকে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবো। যেখানে থাকবে না রাস্তাঘাটের সমস্যা। থাকবে না দুর্নীতি। থাকবে না অত্যাচার-নিপীড়ন। তাছাড়া আমাকে দিয়ে কোনো অনৈতিক কাজ হবে না। বেড়িবাঁধের টাকা লুটপাট কিংবা বালু উত্তোলনের অর্থ আত্মসাতের মতো কর্মকাণ্ডে জড়াব না। কেউ অন্যের জায়গা দখল করতে পারবে না এবং মাদক ব্যবসার কোনো সুযোগ থাকবে না।

লিফলেট বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি নেতা আবুল মনছুর সিকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জালাল উদ্দীন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আশেক উল্লাহ, মো. ইমরানুল হক, উপজেলা যুবদল নেতা জুনাইদুল করিমসহ উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যে গ্রামে বসবাস করলেই মিলবে ২৭ লাখ টাকা!

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল সংঘর্ষ

‘শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডের শহীদ পরিবারকে সহযোগিতা করবে সরকার’

অসুস্থ বিএনপি নেতা ডা. রফিকের খোঁজ নিতে বাসায় জোনায়েদ সাকি

আফগানদের কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে বাংলাদেশের সিরিজ হার

যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল ম্যাচ শেষে এলোপাতাড়ি গুলি, নিহত ৪

চট্টগ্রামে কনসার্টে গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১

চিহ্নিত ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের ওপর দেওয়া উচিত নয় : বিএনপি

জবি তরুণ কলাম লেখক ফোরামের নেতৃত্বে ইমন-সোহান

এনসিপির ‘পলিসি ও রিসার্চ উইং’ গঠন, দায়িত্ব পেলেন যারা

১০

নড়াইলে সাংবাদিকদের মিলনমেলা

১১

‘তিন মাসের মধ্যে ৬ লেনের কাজ দৃশ্যমান হবে’

১২

শাবিপ্রবির ২৫ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত

১৩

ওমরজাইয়ের বোলিং তোপে বিপদে বাংলাদেশ

১৪

প্রবীণদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে : টুকু

১৫

শুধু বক্তব্যে নয়, বাস্তব কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে বিএনপি মানুষের পাশে রয়েছে : আনোয়ারুজ্জামান

১৬

গুম-খুনে জড়িতদের সঙ্গে আপস নেই : আখতার হোসেন

১৭

বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান দুলুর

১৮

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার

১৯

গুম-দুর্নীতি বন্ধে ধানের শীষে ভোট দিন : আশিক

২০
X