পটুয়াখালীর মহিপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি।
রোববার (১২ অক্টোবর) রাতে লতাচাপলী ইউনিয়নের সুমাইয়া (২৫) নামের এক নারী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর দুদিন আগে তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সন্তানটি ঢাকার একটি হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছে।
অন্যদিকে, মহিপুর থানার নজিবপুর গ্রামের সাফিয়া বেগম (৩০) নামের আরেক নারী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সুমাইয়ার স্বজনরা জানান, তিনি গর্ভবতী অবস্থায় হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হয়। প্রথমে তারা সাধারণ জ্বর ভাবেন, পরে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে ডাক্তার সিজার করেন।
এলাকার বাসিন্দা মিজান হাওলাদার বলেন, তুলাতুলি ২০ শয্যা হাসপাতালটা কার্যত অচল। কোনো এমবিবিএস ডাক্তার নেই। এলাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু চিকিৎসা নেই। প্রশাসন দ্রুত হাসপাতাল চালু করুক।
স্থানীয় বাসিন্দা হাসান বলেন, আমরা প্রতিদিন শুনছি নতুন নতুন লোক জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা চেষ্টা করছেন, কিন্তু ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, মহিপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আমরা জনসচেতনতার জন্য মাইকিং ও ঘরে ঘরে প্রচারণা চালাচ্ছি। তুলাতুলি ২০ শয্যা হাসপাতালে একজন এমবিবিএস ডাক্তার পদায়নের প্রক্রিয়া চলছে, তিনি ২/১ দিনের মধ্যে যোগ দেবেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার হামিদ বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মশার লার্ভা ধ্বংসে ফগার মেশিন দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় স্প্রে করা হবে। তুলাতুলি হাসপাতালে ডাক্তারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এদিকে মহিপুর ও আশপাশের এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
মন্তব্য করুন