ফরিদপুর-৩ আসনের (সদর) সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (এমপি) একে আজাদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় যুবদলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের জড়িয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে জেলা যুবদল। সংগঠনটির দাবি, ওই হামলায় যুবদলের কোনো নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা ছিল না। একে আজাদ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়ে যুবদলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) ফরিদপুর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা যুবদলের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে যুবদল নেতারা অভিযোগ করেন, একে আজাদ এবং তার সহযোগীরা জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে ‘পরিকল্পিত তথ্য সন্ত্রাস’ চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে তারা চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার নিরসনে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন— ফরিদপুর মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএম ইউসুফ, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজাওয়ান বিশ্বাস তরুণ, জেলা যুবদলের সহসভাপতি জাহিদুর রহমান, যুবদল নেতা হেমায়েত হোসেন হেলাল, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির খান, কোষাধ্যক্ষ ইলিয়াস মোল্লা প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন শেষে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে জনতা ব্যাংকের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে যুবদলের নেতারা বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর বাজারে ২০২৪ সালের শেখ হাসিনার পাতানো ডামি নির্বাচনের স্বতন্ত্র এমপি একে আজাদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় যুবদলের কারও সম্পৃক্ততা ছিল না। কিন্তু একে আজাদ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই ঘটনায় যুবদল জড়িত বলে ভিত্তিহীন বক্তব্য দেন। এরপর এর সত্যতা যাচাই ছাড়াই তা প্রচারিত হওয়ায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এটি সারা দেশে যুবদলের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার অপপ্রয়াসের একটি অংশ। আগামী নির্বাচন কেন্দ্র করে তারা যুবদলের বিরুদ্ধে এ পরিকল্পিত তথ্য সন্ত্রাস চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘গত ১৯ অক্টোবর ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর বাজারে শেখ হাসিনার ডামি নির্বাচনের স্বতন্ত্র এমপি একে আজাদের গাড়িবহরে হামলাসংক্রান্ত বিষয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় সাধারণ জনমনে ছাড়াও দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।’
জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ওইদিনের ঘটনার সঙ্গে ফরিদপুর জেলা যুবদলের কোনো নেতাকর্মী বা কোনো ইউনিট নেতাদের সংশ্লিষ্টতা নেই, তারা কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিতও ছিলেন না, যা ওইদিনের ঘটনায় প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজেই পরিষ্কার রেকর্ড রয়েছে। বরং সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একে আজাদ যুবদলকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেই মিথ্যা ভিত্তিহীন বক্তব্যের সত্যতা যাচাই ছাড়াই কয়েকটি মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত ও প্রচারিত হওয়ায় এ বিভ্রান্তির অবতারণা হয় বলে প্রতীয়মান হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি যে, ওই ঘটনায় জেলা যুবদলের ন্যূনতম সম্পৃক্ততা নেই, সেখানে যুবদলের কোনো নেতার উপস্থিতি বা সংশ্লিষ্টতা সেখানে ছিল না। তা ছাড়া ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে যুবদলের কোনো সাংগঠনিক কমিটি নেই।’
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনরোষের শিকার হয়ে ওইদিন একে আজাদ তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির মুখে ওই স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন। কারণ, একে আজাদের গাড়িবহরের সঙ্গে পতিত আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মামলার আসামিদের দেখতে পেয়ে স্থানীয় জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তখন তারা ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকেন, পাল্টা স্লোগানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওইদিন ঘটনাস্থলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার লিফলেট ফরিদপুর সদর আসনের বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী চৌধুরী নায়াব ইউসুফের পক্ষে নেতাকর্মীরা সেখানে লিফলেট বিতরণ করছিলেন।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফরিদপুরের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার নিরসনে এবং আগামীর গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করে যুবদল।
মন্তব্য করুন