

ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক যুবককে দুবাই নিয়ে বিক্রি, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের দায়ের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
তাছাড়া অপর একটি ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায় আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তাদের।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে আসামিদের অনুপস্থিতিতে বরিশালের মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সোহেল আহমেদ এই রায় ঘোষণা করেন। একই সাথে সাজাপ্রাপ্তদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির আদেশ দেন বিচারক। তাছাড়া রায় অনুযায়ী পৃথক ধারায় উভয় সাজা একই সঙ্গে চলবে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুরা উপজেলার উত্তর কেরুয়া (নাজির দিঘির পাড়) এলাকার মোশারেফ হোসেনের ছেলে শাহ ইমরান সাগর (৪৫) এবং হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার দত্তপাড়া এলাকার আনসার আলীর ছেলে বাচ্চু মিয়া (৩৭)।
বরিশালের মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী তুহিন মোল্লা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বরাতে তিনি জানান, বরিশাল নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণাফুলিয়া নতুনহাট এলাকার বাসিন্দা নবীন ফরাজীকে (২৮) দুবাই নিয়ে ভাল চাকরি প্রলোভন দেখায় শাহ ইমরান সাগর।
সেই শর্তে ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ নবীনকে দুবাই পাঠান শাহ ইমরান সাগর। দুবাই পৌঁছানোর পর নবীনকে মানবপাচার চক্রের সদস্যদের কাছে বিক্রি করে দেয় বাচ্চু মিয়া। এরপর তাকে আটকে রেখে নির্যাতন চালায় চক্রের সদস্যরা। পরে নবীন তার বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে পাচারচক্রের সদস্যদের দিয়ে মুক্তি পান।
এরপর দুবাইয়ে থাকা এক প্রবাসীর মাধ্যমে দেশে ফিরে আসেন নবীন। এ ঘটনায় ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট দুইজনকে আসামি করে বরিশাল মানব পাচার অপরাধ দমন আদালতে মামলা করেন তিনি। মামলার তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার এসআই শিহাবউদ্দিন ওই দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিচারক ৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই রায় দেন।
মানব পাচার আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) মো. লিয়াকত আলী খান জানিয়েছেন, জরিমানার টাকা বিধি মোতাবেক আদায় করে বাদীকে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
মন্তব্য করুন