

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণার কারণে জনগণকে সংকটে ফেলে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত সংগ্রহ করা অপরিহার্য। কারণ, জনগণের মতেই হবে সরকারের ভিত্তি।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনা-৩ আসনের দৌলতপুর থানাধীন শহীদ মিনার চত্বরে দৌলতপুর থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গণভোট ছাড়া আগামী ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের কোনো আইনি ভিত্তি নেই। সংবিধান অনুযায়ী প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২৪ সালে। বর্তমানে সংবিধানের অনেক ধারা ও অনুচ্ছেদ কার্যকর নেই। প্রধান উপদেষ্টা কীভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত হয়েছেন, এমন কোনো বিধান সংবিধানে নেই।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধানে নেই, নির্বাচন ও প্রধান উপদেষ্টার কোনো বিধান নেই। সুতরাং জুলাই সনদ একমাত্র সংবিধানের অংশ হিসেবে সব বিষয়কে আইনি ভিত্তি দিতে পারে।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, একটি অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি বড় দল দু-তিনজন উপদেষ্টাকে প্রভাবিত করে ফের ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন একসঙ্গে চলবে। যারা জুলাই সনদ মানতে চায় না, তাদের জন্য ২০২৬ সালের নির্বাচন প্রযোজ্য নয়।
দৌলতপুর থানা জামায়াতে ইসলামীর আমির মু. মুশাররফ আনসারীর সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। মহানগরী ব্যবসায়ী থানার সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান স্বপনের পরিচালনায় জনসভায় আরও বক্তৃতা করেন- জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, মহানগরী নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজী, খুলনা জেলা সহকারী সেক্রেটারি গাউসুল আযম হাদী, অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান বক্তা অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, মহান আল্লাহর ইচ্ছায় এবং জনগণের ভালোবাসা ও ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতিমুক্ত, ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সমাজের নেতৃত্ব পরিবর্তন অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, আগামীর বাংলাদেশে ঘুষ, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি মুক্তি আনতে না পারলে দেশ ব্যর্থ হবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, সত্য, ন্যায় ও নৈতিকতার ভিত্তিতে সমাজ পরিচালিত হবে এবং কল্যাণভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে। নির্বাচিত হলে তিনি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ভিত্তিতে কাজ করবেন।
মন্তব্য করুন