

একমাত্র ছেলে প্রবীর সিংহের ফিরে আসা যেন দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও বেদনার এক অধ্যায়ের সমাপ্তি। ১৭ বছরের দীর্ঘ কারাজীবন শেষে অবশেষে বাবার কোলে ফিরলেন তিনি। বাড়ির উঠানে পা রাখতেই বাবাকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পাশে থাকা স্বজন ও প্রতিবেশীরাও আবেগ থামাতে পারেননি।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর বালিগাঁও গ্রামের নিজ বাড়িতে পৌঁছান তিনি। মুহূর্তেই পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে কান্না, স্মৃতি আর ফিরে পাওয়ার আনন্দে।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পান প্রবীর সিংহ।
জানা গেছে, চাকরির পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার সময় প্রবীর সিংহ তখন খাগড়াছড়ির রামগড় এলাকায় কর্মরত ছিলেন। ২০০৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ও ২৬ মার্চের স্কাউটিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য তাকে ঢাকায় আনা হয়। ঠিক ওই সময়ই ঘটে পিলখানার মর্মান্তিক বিডিআর বিদ্রোহ। সেই ঘটনার পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং শুরু হয় তার দীর্ঘ ১৭ বছরের কারাজীবন।
এদিকে, প্রবীর সিংহের মুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে আবেগঘন পরিবেশ। শত শত মানুষ ছুটে আসেন তাকে এক নজর দেখতে। কারাগার থেকে ফেরার পর তাকে কেউ হাত ধরে কাঁদছেন, কেউবা নীরবে তাকিয়ে রয়েছেন হারানো সময়ের স্মৃতিকাতরতায়।
প্রবীর সিংহের বাবা লক্ষীন্দ্র সিংহ আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, ‘১৭ বছর পর আমার ছেলে ঘরে ফিরেছে। এই দিনের জন্য কত অপেক্ষা করেছি—তা কাউকে বোঝাতে পারব না। ভগবানের কৃপায় অন্তত জীবিত অবস্থায় তাকে পেলাম।’
এর আগে, গত সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ৩৫ জন। এ সময় কারাফটকে তাদের আত্মীয়স্বজন উপস্থিত ছিলেন। আসামিদের মধ্যে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একজন, কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে দুজন এবং পার্ট-২ থেকে ৩২ জন মুক্তি পেয়েছেন।
মন্তব্য করুন