লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শীতের সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুরের অলিগলিতে পিঠা বিক্রির ধুম

লক্ষ্মীপুর জেলার হাট-বাজারে সন্ধ্যা হলেই ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে শুরু হয় শীতের পিঠা বিক্রি। ছবি : কালবেলা
লক্ষ্মীপুর জেলার হাট-বাজারে সন্ধ্যা হলেই ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে শুরু হয় শীতের পিঠা বিক্রি। ছবি : কালবেলা

শীত মানেই পিঠার আমেজ, উষ্ণ স্বাদ আর মিলনমেলার আনন্দ। শীতের আগমনী হাওয়া শুরু হতেই লক্ষ্মীপুরে জেলায় বাড়ে পিঠার কদর। প্রাচীন এই পিঠা সংস্কৃতি আজও লক্ষ্মীপুরের গ্রামীণ জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে টিকে আছে। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সন্ধ্যা হলেই ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে শুরু হয় বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পিঠা বিক্রি। এসব দোকানে দেখা মেলে ভাপা পিঠার ধোঁয়া, খেজুর গুড়ের সুগন্ধ আর ক্রেতাদের আনাগোনা।

এখানে পাওয়া যায় ভাপা, পাটিসাপটা, চিতই, তেলের পিঠা, খোলা পিঠা, আঁখি পিঠা, টিকিয়া, দুধচিড়া, নারকেল-পোড়া পিঠা—নানা স্বাদের পিঠা যেন শীতকে আরও আপন করে তোলে। চিতই পিঠার সঙ্গে মিলছে সরিষা, ধনেপাতা, কালোজিরা ও শুঁটকিসহ বিভিন্ন রকমের ভর্তা। রকমভেদে ৫ থেকে শুরু করে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব পিঠা। অনেক দোকানে এখন আধুনিক পরিবেশে পিঠা বিক্রি হচ্ছে—যেখানে কফি বা চায়ের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় নানা ধরনের পিঠা।

রামগতি উপজেলার হাজিরহাট বাজারের পিঠা বিক্রেতা রহিমা খাতুন বলেন, শীতের মাসগুলো আমাদের প্রধান মৌসুম। প্রতিদিন বিকেল থেকেই পিঠা বানানো শুরু করি। খেজুর গুড়ের নতুন রস উঠলে আরও বেশি ক্রেতা আসে।

শুধু বাজারেই নয়—জেলার গ্রামাঞ্চলেও সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় পিঠা বানানোর মিলনমেলা। পরিবার-পরিজন, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন সবাই মিলে পিঠা তৈরি ও খাওয়ার মাধ্যমে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। অনেক পরিবারে শীতের এক রাতে পিঠা উৎসব আয়োজন এখন নিয়মিত রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শীতকালীন পিঠা উৎসব আয়োজন করছে প্রতিবছরই। এ ছাড়াও বিভিন্ন স্কুল-কলেজে চলছে পিঠা প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রতিযোগীরা নতুনভাবে সাজানো পিঠা প্রদর্শন করেন। এতে তরুণ প্রজন্মও নিজেদের সাংস্কৃতিক শেকড়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে।

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার বলেন, শীত এলেই আমরা বান্ধবীরা মিলে পিঠা খেতে বের হই। এখন তো এমন অনেক দোকান আছে যেখানে ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেলে নতুন ধরনের পিঠাও পাওয়া যায়।

সংস্কৃতিকর্মী আবুল কালাম আজাদ বলেন, পিঠা আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ। আধুনিক দুনিয়া যতই বদলায়, পিঠা আমাদের লোকসংস্কৃতিকে আজও ধরে রেখেছে। এই আয়োজন আমাদের নতুন প্রজন্মকে শেকড়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।

প্রসঙ্গত, শীত মৌসুমে লক্ষ্মীপুরে যে পিঠার উন্মাদনা দেখা যায়, তা প্রমাণ করে এখনো মানুষ শেকড়ের টানে, স্বাদের টানে ও ঐতিহ্যের ভালোবাসায় ফিরে আসে এই শত বছরের পিঠা সংস্কৃতির কাছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইপিএলে দল পেলেন না অজি অধিনায়ক

ভুলেও সয়াবিন খাবেন না যে ৫ ধরনের ব্যক্তি 

গাজা নিয়ে ‘ভয়ংকর অভিযোগ’, অ্যামনেস্টির সতর্কবার্তা

জামায়াত নেতৃত্বাধীন ৮ দলের খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ ১ ডিসেম্বর

নির্বাচিত হলে সমৃদ্ধ হবে দাগনভূঞা ও সোনাগাজী : আব্দুল আউয়াল মিন্টু 

নির্বাচিত হলে খাল দখলমুক্ত করে জলাবদ্ধতা দূর করব : কাজী আলাউদ্দিন

বিএনপি থেকে ‘সুখবর’ পেলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল

বাউলদের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে : প্রেস সচিব

ধবলধোলাই হওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ নিবে না বিসিসিআই

যুবদলের এক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

১০

লিভারের জন্য বিপজ্জনক যে ৫ খাবার

১১

কপোতাক্ষের পাড় কেটে মাটি উত্তোলন, ৪ জনের কারাদণ্ড 

১২

নতুন কুঁড়ির সেরা দশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে স্বাধিকা

১৩

টানা ৩০ দিন প্রতি রাতে গুড় ভেজানো পানি খেলে কী হয়?

১৪

সরকারের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই নির্বাচন করবেন : আসিফ মাহমুদ

১৫

রুশ যুদ্ধবিমানকে ধাওয়া করছে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র, ভিডিও ভাইরাল

১৬

কুবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কালবেলার আবু শামা

১৭

ভারতে নতুন আতঙ্ক, বাঁচতে অদ্ভুত কাণ্ড

১৮

নির্বাচনের আগে হাজার হাজার মানুষকে ক্ষমা জান্তার

১৯

ট্র্যাভিস জীবনের সবচেয়ে বড় চমক : টেইলর সুইফট

২০
X