

রাজশাহীতে বাসচালকের সহকারীর ধাক্কায় চলন্ত বাস থেকে পড়ে আলাউদ্দিন ইসলাম ওরফে টগর নামের এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এর আগে গত রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী নগরের লিলিহলের বাঁশের আড্ডা এলাকায় একটি বাস থেকে আলাউদ্দিনকে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
নিহত যাত্রী আলাউদ্দিন ইসলাম টগর (৩৫) রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের কুলপাড়ার আবু সাইদের ছেলে। তিনি একজন কৃষক ছিলেন।
নিহত আলাউদ্দিনের চাচাতো ভাই আল-আমীন বলেন, তার চাচাতো বোন রুমি খাতুনের শ্বশুরবাড়ি গোদাগাড়ীতে। বোনকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের একটি বাসে উঠিয়ে দিতে গিয়েছিলেন আলাউদ্দিন। চালকের সহযোগী তাদের জানান, বাসে সিট আছে। কিন্তু ভেতরে গিয়ে আলাউদ্দিন দেখেন, বাসে কোনো সিট খালি নেই। তখন এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চলন্ত বাস থেকে আলাউদ্দিনকে মারধর করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, আলাউদ্দিনকে সড়কে পড়ে থাকতে দেখে বোন রুমি কোলের বাচ্চাকে পাশের যাত্রীর কাছে দিয়ে দ্রুত বাস থেকে নামেন। তখন একটি মাইক্রোবাস বাসটিকে থামিয়ে দেয়। পরে কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ বাসটি হেফাজতে নেয়।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি ঘটনাটি ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন। তবে তিনি দাবি করেন, আলাউদ্দিন তার বোনকে বাসে তুলে দিয়ে নামতে দেরি করেন। এর মধ্যে বাস ছেড়ে দিলে তিনি নামতে চান। এ সময় বাসের সহকারী ‘টাইমের গাড়ি’ উল্লেখ করে সামনে নামিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে কথা কাটাকাটির সময় আলাউদ্দিন বাসের সহকারীকে বাসের ভেতর মারধর করেন। তখন সহকারী বলেন, আপনি আমাকে মারলেন, সামনে কাশিয়াডাঙ্গায় আমাদের মাস্টার আছে, সেখানে চলেন। এ কথা শুনে তিনি বাস থেকে লাফ দেন।
কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি আজিজুল বারী বলেন, সিট আছে বলে যাত্রী তুলে হেলপার-সুপারভাইজার সিট দিতে পারেননি। এরপর তারা উল্টো আলাউদ্দিনকে মারধর করে বাস থেকে ফেলে দেন। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে আলাউদ্দিনের ভাই দুলাল হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাসের চালক ও তার সহযোগী পলাতক। বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এজাহারে তাদের নাম নেই। তবে আমরা বাসের মালিককে প্রথমে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, মালিককে দ্রুতই খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। মালিকের তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাসের চালক ও হেলপারকে আমরা শনাক্ত করতে পারব।
ওসি আজিজুল বারী বলেন, ময়নাতদন্তের পর আলাউদ্দিনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন