

নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান নবীন কর্মকর্তাদের দেশপ্রেম ও কর্তব্য নিষ্ঠার সঙ্গে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালনের আহবান জানিয়েছেন। পাশাপাশি সততা, সঠিক নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের মন্ত্রে বলীয়ান হয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় নবীন কর্মকর্তাদের সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেন।
পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ মহান দায়িত্বকে বেছে নেওয়ায় নবীন কর্মকর্তা ও তাদের অভিভাবকদের তিনি আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
রোববার (০৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে নৌবাহিনীর মিডশিপম্যান ২০২৩-এ ব্যাচের প্রশিক্ষণ শেষে অনুষ্ঠিত শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নৌবাহিনী প্রধান বিভিন্ন বিষয়ে কৃতী প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে পদক তুলে দেন। মিডশিপম্যান সৈয়দ তাহসিন আহমেদ সব বিষয়ে সেরা চৌকশ মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।
মিডশিপম্যান এসএম আবরার ওবাইদ প্রশিক্ষণে ২য় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। পরে সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান ব্রত নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেন।
কুচকাওয়াজ শেষে নৌবাহিনী প্রধান, অতিথি এবং প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী মিডশিপম্যানদের অভিভাবকরা নবীন কর্মকর্তাদের অ্যাপুলেট পরিয়ে দেন। এছাড়াও, কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নেভাল এভিয়েশনের মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টারের বিশেষ ফ্লাইপাস্ট অনুষ্ঠিত হয়।
নৌবাহিনী প্রধান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ কমান্ডোদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রগতিশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিনির্ভর ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে সিম্যুলেশন ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, আধুনিক প্ল্যাটফর্ম সংযোজন ও নিজস্ব প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী তার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে ও নিজস্ব সক্ষমতায় লার্জ পেট্রোল ক্রাফট, এলসিটি, ডাইভিং বোট নির্মাণের পাশাপাশি বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো থেকে হেলিকপ্টার, আনম্যান্ড এয়ারক্রাফট, বিভিন্ন সক্ষমতার জাহাজ সংযোজনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সামুদ্রিক সম্পদের সুরক্ষা, সমুদ্রপথে অপরাধ দমন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশ-বিদেশে মানবিক সহযোগিতা, সংকটকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকাগুলোতে টহল ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় গৌরবময় ভূমিকা পালনের পাশাপাশি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নৌবাহিনী প্রশংসনীয় অবদান রেখে যাচ্ছে।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন