ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে দুই বছরেও সংস্কারকাজ শেষ না করায় রাস্তার ওপরে ধানের চারা রোপণ করে, সার ছিটিয়ে, কীটনাশক স্প্রে করে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থানীয়রা। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বোরহানউদ্দিন উপজেলার আজিমুদ্দিন বাজার সংলগ্ন রাস্তার ওপর এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
স্থানীয়দের ধানের চারা রোপণের একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু তাতেও টনক নড়েনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ সড়ক কর্তৃপক্ষের।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় দুই বছর ধরে রাস্তার ওপর প্রশস্তকরণের জন্য কার্পেটিং উঠিয়ে বালু মিশ্রিত পাথর ফেলে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় যানবাহন। বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত। ওইসব গর্তে পড়ে যানবাহন বিকল হওয়াসহ নানা দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত।
একদিকে যেমন কাঁদামাটি, তার সাথে বৃষ্টির পানি, এমন অবস্থায় নাজেহাল পথচারী, স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা। বিড়ম্বনায় শিকার এই রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরাও। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। তাই দীর্ঘদিনের ভোগান্তি আর ক্ষোভের বহি:প্রকাশ স্বরূপ এবার আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর ধানের চারা রোপণ করে, সার ছিটিয়ে, কীটনাশক স্প্রে করে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কাজের বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের ৯৬ কিলোমিটার রাস্তা ১৮ ফুট থেকে ৩০ ফুট প্রশস্তকরণে ৮৪৯ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে ভোলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
মহাসড়কের এ কাজের দায়িত্ব পায় এম এম বিল্ডার্সসহ ৮টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় আরও ১ বছর কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই সঙ্গে প্রকল্প ব্যয় ৮৪৯ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৮৭৮ কোটি টাকা করা হয়।
কিন্তু চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে সড়কের বিভিন্ন অংশে ৮৩ কিলোমিটার কাজ শেষ হলেও ১ বছরের বেশি সময় ধরে মুখ থুবরে পড়ে আছে এম এম বিল্ডার্সের বাকি ১৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ। যার মধ্যে রয়েছে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ৫ কিমি ও লালমোহন উপজেলার ৭ কিমি রাস্তা।
মহাসড়কের এ অবস্থার জন্য এম এম বিল্ডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করে সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করলে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে এম এম বিল্ডার্সের প্রকল্প ম্যানেজার মোরশেদ আলম ভূঁইয়া বলেন, বর্তমানে মালামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়া এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে কাজে বিলম্ব হচ্ছে।
মন্তব্য করুন