

জামালপুরের ইসলামপুরে কুড়িয়ে পাওয়া এক নবজাতকে দত্তক নিতে আবেদন করেছে ৪৫ পরিবার।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা পর্যন্ত এসব আবেদন জমা পড়েছে সমাজসেবা অফিস কর্তৃপক্ষের কাছে।
আবেদন করার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন আরও কয়েকজন। জটিলতা এড়াতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছিল আগ্রহীদের।
গত ৮ ডিসেম্বর উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ-জামালপুর সড়কের পাশে ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয় মেয়ে নবজাতকটিকে। জন্মের পরপরই কে বা কারা তাকে ফেলে রেখে যায় সেখানে। পরে উপজেলা প্রশাসনের হাত ঘুরে পরে তার স্থান হয়েছে মোশারফগঞ্জ এলাকার শাহজালালের বাড়িতে।
এরই মধ্যে ফেসবুকে ফুটফুটে শিশুটির ছবি ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। তারপর থেকে শিশুটি একনজর দেখতে শাহজালালের বাড়িতে আসছেন অনেকে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, সোমবার ভোরে ইসলামপুর পৌরসভার মোশারফগঞ্জ বাজার এলাকায় সড়কের পাশ থেকে নবজাতকের কান্নার শব্দ আসছিল। শব্দ পেয়ে স্থানীয় শাহজালাল প্রতিদিনের মতো রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে ওই নবজাতককে দেখতে পান। এরপর শাহজালাল ও তার মা আমেনা বেগম শিশুটিকে উদ্ধার করে ৯৯৯-এ ফোন দেন।
পরে পুলিশ গিয়ে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সেখানে যান সমাজসেবা কার্যালয়ের শিশু সুরক্ষা সমাজকর্মী আনোয়ার। পরে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার কোনো সন্তান নেই। ফেসবুকে মেয়ে শিশুটি দেখে স্ত্রীকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। আমার খুব মায়া হয়েছে। ওকে কেউ না নিলে আমরা দত্তক নিতে চাই।’
হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান ডা. এ এস এম আবু তাহের কালবেলাকে জানান, শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। সোমবারই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা রুহুল আমিন কালবেলাকে বলেন, ‘শিশুটির দায়িত্ব নিতে এখন পর্যন্ত ৪৫ জন আবেদন করেছেন। আবেদনগুলো নিয়ে জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে শিশুটি মোশারফগঞ্জ শাহজালালের বাড়িতে থাকবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন কালবেলাকে বলেন, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করি। তার সুস্থতা ও নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সমাজের সম্মিলিত দায়িত্ববোধ ও সহমর্মিতা এই শিশুটির নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে বলে আমরা আশা করি।
মন্তব্য করুন