দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘মায়ের কান্না’ নামের সংগঠনের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা হয়েছে। ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যাকারী জিয়ার গুম-খুন এবং খালেদা জিয়ার অগ্নিসন্ত্রাসে ভূলুণ্ঠিত মানবাধিকার’ শিরোনামে শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ সভা হয়।
এতে বক্তারা বলেন, ১৯৭৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হাজারো সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যকে ‘হত্যা করে’ তাদের লাশ ‘গুম’ করেন। অন্যায়ভাবে ফাঁসি, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত করার অপরাধে জিয়ার মরণোত্তর বিচারের দাবি জানান তারা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা সংসদ সদস্য নাহিদ এজাহার খান। প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম, একুশের পদকপ্রাপ্ত মানবাধিকার কর্মী এস এম আব্রাহাম লিংকন, দীপ্ত টিভির সিইও ফুয়াদ হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতুফুজ্জামান মিতা। এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার আগে ‘গণদাবি-৭৭’ ও ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ নামক দুটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, ‘কিছু দেশ আমাদের মানবতা ও মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল, তখন কোথায় ছিল মানবতা?’
জিয়াউর রহমানকে ‘খুনি’ আখ্যায়িত করে এবং তার সময় ‘গুম, খুন ও বিনা বিচারে হত্যা শুরু হয়’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশে খুনের রাজনীতি শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।’
ট্রুথ কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতা এবং ১৯৭৭ সালে সেনা ও বিমানবাহিনীর গর্বিত সৈনিকদের হত্যাকারীদের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী। এ ছাড়া অবৈধ গুম ও খুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ ছাড়া ‘গুম, খুন ও অগ্নিসন্ত্রাসকারী দল’ যাতে ভবিষ্যতে কখনও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ঢাকায় জাপানি বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পরিকল্পিতভাবে একটি অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি করেন। পরে তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে জিয়াউর রহমান একদিনের সামরিক আদালতে বিচার করে সেই রাতেই ফাঁসি সম্পন্ন করেন নিরপরাধ সামরিক সদস্যদের। রাতের আঁধারে কারফিউ দিয়ে ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর ও বগুড়া কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করা হতো। এ ঘটনায় জিয়ার মরণোত্তর বিচার এবং সংসদ ভবন এলাকা থেকে তার কবর অপসারণের দাবি জানান তারা।
মন্তব্য করুন