জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলায় অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ খান ও উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মো. আব্দুল হামিমের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামালপুর জেলা যুগ্ম জজ প্রথম আদালতে এই মামলা করেন উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেসার্স মাজেদা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আশরাফুল আলম মানিক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কারখানার আওতাধীন শেরপুর বাফার গুদামের জন্য দেড় লাখ টন সার বহন ও রি-ব্যাগিং কাজের জন্য গত ১৬ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই কাজটি দরপত্রের মাধ্যমে আগে থেকেই করে আসছিলেন যমুনা সার কারখানার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাজেদা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আশরাফুল আলম মানিক। কিন্তু দরপত্রের শর্তানুযায়ী কাজ সম্পন্ন ও বিল পরিশোধের আগে নতুন দরপত্র আহ্বান করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় দরপত্র স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে মামলা করেন তিনি।
গত ৪ জুলাই মামলার শুনানি হয়। এরপর ২৭ জুলাই আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু নির্ধারিত দিনে আদেশ না দেওয়ায় বিবাদীপক্ষ আদালত বদলি চেয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিস মামলা করেন।
পরে ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল ২১ সেপ্টেম্বর। কিন্তু বিবাদীপক্ষ আদালতের আদেশের আগেই ১৮ সেপ্টেম্বর ফের দরপত্র আহ্বান ও গ্রহণ করে। পরে এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ খান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মো. আব্দুল হামিমের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন ইউপি চেয়ারম্যান মানিক।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী কালবেলাকে বলেন, আদালতের আদেশ থাকার পরেও টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালনা করে তারা আদালত অবমাননা করেছে। তারা যে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করেছে এ বিষয়ে আমাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এ ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে।
এদিকে মেসার্স মাজেদা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আশরাফুল আলম মানিক কালবেলাকে জানান, দরপত্র স্থগিতাদেশ চেয়ে তিনি এর আগে মামলা করেছিলেন। মামলা শুনানির আগেই তারা আবারও দরপত্র আহবান করে কোর্টের আদেশ অমান্য করেন। তাই তিনি তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন।
এ বিষয়ে যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ খান কালবেলাকে বলেন, এর আগে কোর্ট থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এর জবাব আমরা দিয়েছি। এ ছাড়াও মামলায় তিনবার তারিখ পেছানো হয়েছে, কিন্তু কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত আসেনি। সার সরবরাহ একটি স্পর্শকাতর বিষয়। তাই পুনরায় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এতে কোর্ট ভায়োলেন্স হয়ে থাকলে আমরা সেটার জবাব দেব। এরপর কোর্ট যেটা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই করা হবে।
মন্তব্য করুন