জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:৫২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

হাসপাতালের খরচ মেটাতে কিডনি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন দিনমজুর

নবজাতককে দেখতে হাসপাতালে ওসি। ছবি : কালবেলা
নবজাতককে দেখতে হাসপাতালে ওসি। ছবি : কালবেলা

সুনামগঞ্জে জগন্নাথপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যেম স্ত্রীর সন্তান প্রসবের ব্যয় জোগাতে ব্যর্থ হয়ে কিডনি বিক্রির বিজ্ঞাপন দিতে চেয়েছিলেন এক দিনমজুর। এজন্য তিনি এক সাংবাদিককে ফোন দিয়েছিলেন। তার উদ্যোগে পুলিশ সম্পৃক্ত হয়ে বিলের বেশিরভাগ মওকুফের ব্যবস্থা করে। জগন্নাথপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে গত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের আছিমপুর গ্রামের দিনমজুর শামছুল হক সিজার অপারেশনের জন্য তার স্ত্রীকে উপজেলা সদরের নগর মাতৃসদন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। ভর্তির সময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শামছুল হককে জানায়, সব মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো বিল আসবে। তিনি তাতে রাজি হয়ে স্ত্রীকে ভর্তি করান। পরে ওই রাতে অপারেশনের মাধ্যমে এই দম্পতির ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।

এদিকে, দুদিনে ক্লিনিকের বিল আসে ১৬ হাজার ৬৫০ টাকা। এরপর থেকেই শামছুল হক ক্লিনিকের বিলের জন্য আত্মীয়স্বজনদের কাছে টাকা চাইতে শুরু করেন। শেষমেশ কোনো উপায় না পেয়ে সিদ্ধান্ত নেন নিজের কিডনি বিক্রি করবেন। কিডনি বিক্রির বিজ্ঞাপনের জন্য তিন পত্রিকার প্রতিনিধি সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিডনি বিক্রির কারণ জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কিডনি বিক্রি করে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করবেন।

শামছুল হক বলেন, অভাবের সংসার। দিন আনি, দিন খাই। স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা চিন্তা করে বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করি। ভর্তির সময় তারা বলেছিলেন বিল প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো আসবে। তখন মনে করেছিলাম টাকা জোগাড় করতে পারব। কিন্তু নিজের স্বজনসহ অনেকের কাছে হাত পেতেও কোনো সাহায্য পাইনি। কোনো উপায় না পেয়ে সিদ্ধান্ত নেন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজের কিডনি বিক্রি করবেন।

শামছুল হক আরও বলেন, কিডনি বিক্রির কথা শোনার পর তিনি (সাংবাদিক) তখন থানার ওসির কাছে নিয়ে যান। পরে ওসি স্যার ক্লিনিক এসে বিল মওকুফের জন্য সুপারিশ করেন। আমার পরিবার ওসি মিজানুর রহমানে প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।

নগর মাতৃসদন ক্লিনিকের এমআইএস অ্যান্ড কোয়ালিটি এসোরেন্স কর্মকর্তা রাকিবুর রহমান বলেন, ভর্তির সময় ওই ব্যক্তিকে অপারেশন বিল ১২ হাজার টাকা জানানো হয়। উনাকে আমরা বলেছিলাম সব মিলিয়ে বিল ২০ হাজার টাকার নিচে থাকবে। সেই অনুযায়ী বিল ১৬ হাজার ৬৫০ টাকা আসে। দুদিন পর থানার ওসি মিজানুর রহমান এসে কিডনি বিক্রির বিষয়টি জানালে মানবিক দিক বিবেচনা করে ৪ হাজার টাকা জমা নিয়ে বাকি টাকা মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে ক্লিনিকে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। এরপর কর্তৃপক্ষকে শামছুল হকের আর্থিক অবস্থার কথা জানাই। এতে তারা অপারেশনে ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও ওষুধের দাম দাবি করেন। পরে ওই দিনমজুরের কাছে থাকা ৪ হাজার টাকা জমা দিয়ে বাকি টাকা মওকুফ করানো হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মোবাইলে আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ওয়ানডে ম্যাচ দেখবেন যেভাবে

টানা ৫ দিন বজ্রবৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

আবাসিক হোটেল থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

অ্যাসিস্ট্যান্ট মার্কেটিং অফিসার পদে নিয়োগ দিচ্ছে আবুল খায়ের গ্রুপ

রামপুরায় ২৮ হত্যা / বিজিবির রেদোয়ানুলসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

সপ্তাহে দুদিন ছুটিসহ বসুন্ধরা গ্রুপে চাকরির সুযোগ

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজে চাকরির সুযোগ, দ্রুত আবেদন করুন

৮ বছরেও হয়নি ভাঙা সেতু সংস্কার, পারাপারে ভরসা ‘ড্রামের ভেলা’ 

গাজার পথে আটক শহিদুল আলম / সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুলের আহ্বান

ভারত থেকে ভেসে আসা গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ‘চন্দন কাঠ’ নামে

১০

তীব্র যানজট, মোটরসাইকেলে গন্তব্যে গেলেন সড়ক উপদেষ্টা

১১

টাইফয়েড টিকা নিয়ে গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান

১২

ফিফার গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে বাংলাদেশের দুজন

১৩

অচল দৌলতপুর প্রাণিসম্পদ অফিস, ভোগান্তিতে হাজারো খামারি

১৪

চালকের গলা কেটে ব্যাটারিচালিত ভ্যান ছিনতাই

১৫

সঙ্গীর কথা বলা বন্ধ করে দেওয়া শুধু অভিমান নয়, হতে পারে মানসিক নির্যাতন

১৬

গুমের বিচারের মুখোমুখি শেখ হাসিনাসহ ৩০ জন

১৭

মাছ ধরতে গিয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু

১৮

রান্নায় হলুদ বেশি পড়ে গেছে? যা করণীয়

১৯

হত্যা মামলায় নতুন করে গ্রেপ্তার মেনন-আতিক-পলক

২০
X