ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথদীঘি মুক্তাঞ্চল দিবস আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর)। স্বাধীনতা যুদ্ধের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের নিরলস প্রচেষ্টায় সীমান্তবর্তী এই ইউনিয়নটির উভয় দিকে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা শত্রুমুক্ত হয়েছিল।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদীঘি মুক্তাঞ্চল স্মৃতি পরিষদের কর্মকর্তাদের মতে, সরাসরি যুদ্ধের মাধ্যমে এটিই বাংলাদেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল। এ পরিষদ আজ দিবসটি পালনের জন্য সমাবেশ ও মুক্ত আলোচনাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
জগন্নাথদীঘি মুক্তাঞ্চল স্মৃতি রক্ষা পরিষদ সূত্রমতে, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের বেতিয়ারায় মুক্তিবাহিনীর ৯ জন গেরিলা যোদ্ধা শহীদ হন। এতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিবহিনীর আক্রমণ দাবানলের মতো তীব্র হয়ে উঠে। ফলে ২৭ নভেম্বর শেষ রাতে জগন্নাথদীঘির পাড়ে অবস্থিত পাকবাহিনীর ক্যাপ্টেন জংয়ের ঘাঁটির পতন ঘটে এবং জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। পর দিন ২৮ নভেম্বর সকাল ১০টায় মুজিবনগর সরকার নিয়ন্ত্রিত ডিমাতলী (বড়টিলা) ক্যাম্পের প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা জসীম উদ্দিন চৌধুরী তার ১৬ জন সহযোদ্ধাকে সাথে নিয়ে তৎকালীন কুমিল্লার ৪ জন গণপরিষদ সদস্য মরহুম অ্যাডভোকেট মীর হোসেন চৌধুরী, আবদুল আওয়াল, আলহাজ আলী আকবর মজুমদার ও জালাল আহম্মদের উপস্থিতিতে জগন্নাথদীঘি ইপিআর ক্যাম্প (সাবেক বিজিবি ক্যাম্প) অর্থাৎ পাক বাহিনীর ক্যাপ্টেন জং এর ঘাটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। হানাদার বাহিনী ক্যাপ্টেন জং এর ঘাটি কার্যকরভাবে দখলের পর তাৎক্ষণিকভাবে মুজিবনগর সরকারের স্বীকৃতি লাভ করে।
মুক্তাঞ্চল স্মৃতি রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির প্রেক্ষিতে এলজিইডি প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ স্থানটিতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও একটি মিলনায়তন স্থাপন করেছে। বিকেল ৩টায় ওই স্থানে আলোচনা ও স্মৃতিচারণ সভার আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে বরণ্য মুক্তিযোদ্ধাগণ আলোচনায় অংশ নেবেন।
মন্তব্য করুন