নোয়াখালীর চাটখিল পৌর বাজারে চোরের ভয়ে এসি খুলে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক মাস ধারাবাহিকভাবে চুরি হয়ে যাচ্ছে বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসির আউটডোরের অংশ। থানায় লিখিত অভিযোগ করেও ব্যবসায়ীরা কোনো প্রতিকার পাননি। যে কারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই এসির আউটডোর খুলে ফেলেছেন কিছু ব্যবসায়ী।
জানা যায়, গত এপ্রিলের শেষ দিকে এবং মে মাসের শুরুতে বাজারের নিউ ইসলাম জুয়েলার্স, আফজাল সুজ, কুমিল্লা ফ্যাশন, এপেক্স ক্লাসিক শোরুম, চাটখিল শিশু-কিশোর জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এসির আউটডোরের যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনা ঘটে। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বাজার কমিটিকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানোর পাশাপাশি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এসবের মধ্যেই সর্বশেষ ২৬ এবং ২৭ জুন আরও চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এসির আউটডোরের কম্প্রেশারসহ বিভিন্ন অংশ চুরি হয়ে যায়।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ২৭ জুন রাতে উপজেলা পরিষদের বাউন্ডারি ওয়াল ঘেঁষে লাগানো চারটি এসির আউটডোর খুলে ফেলছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের আশঙ্কা- ঈদের বন্ধে এসব আউটডোর চুরি হয়ে যেতে পারে। উপজেলা পরিষদের ভেতর থেকে বাউন্ডারি ওয়াল টপকানো ছাড়া এসব আউটডোর পর্যন্ত পৌঁছানো কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। উপজেলা পরিষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এভাবে চুরি যাওয়ার ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
নিউ ইসলাম জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী সুমন চৌধুরী বলেন, ‘দুই মাস আগে আমাদের অনেকেরই এসির আউটডোর কম্প্রেসারের বক্স ভেঙে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। আমি থানায় গিয়ে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিশ এসে স্থান পরিদর্শন করে যাওয়া ছাড়া আর কোনো কাজ হয়েছে বলে মনে হয়নি। যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে এখনো এসির আউটডোর চুরি বন্ধ হচ্ছে না। উপজেলা পরিষদের ভেতর থাকা সিসি ক্যামেরা চেক করলেও এসব চুরির ভিডিও পাওয়া যাওয়ার কথা। কিন্তু এ বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েও উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো সহযোগিতা পাননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।’
চাটখিল বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ও চাটখিল পৌরসভার মেয়র ভিপি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিরাপদ রাখতে আমরা কাজ করছি। বাজার থেকে এভাবে চুরি হওয়া দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
চাটখিল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন দুই মাস আগে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। আগের অভিযোগ এখনো তদন্ত চলমান রয়েছে। তবে সাম্প্রতিককালের নতুন করে চুরি হওয়া কিংবা চোরের ভয়ে এসির আউটডোর খুলে ফেলার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে কালবেলাকে জানান।
সর্বশেষ ২৬ ও ২৭ জুন চুরি হওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- শীতল ফ্যাশন, রুপের হাট, চাঁদনি জুয়েলার্স, প্রিয়াঙ্গন ফ্যাশন।
উল্লেখ্য, চোরের ভয়ে আউটডোর খোলার কয়েক ঘণ্টা পর ২৭ জুন রাতে এসির আউটডোর না পেয়ে সেসব আউটডোরের পাইপ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন