গাজীপুরের বিভিন্ন হাটবাজারে গরুর মাংসের দাম কমেনি। ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করলেও এ দামে বাজারে গরুর মাংস মিলছে না। বিভিন্ন দোকানে এখনো ৭০০-৭২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা বাজার, জয়দেবপুরসহ বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০০-৭২০ টাকা। এছাড়া দোকানগুলোতে টাঙানো নেই কোনো বিক্রির তালিকা। ফলে বিভিন্ন অজুহাতে বিক্রেতারা দামের তারতম্য করছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। বাজারে আসা বেশিরভাগ সচেতন ক্রেতারা মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দাম নিয়ে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন।
ক্রেতারা জানিয়েছেন, খবরে-টিভিতে মাংস ব্যবসায়ী সমিতি গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা, অথচ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ৭০০-৭২০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করছেন। কেউ নির্দেশনা মানছে না। ফলে বাধ্য হয়ে তারা সেই দামে গরুর মাংস কিনছেন।
ক্ষুব্ধ ক্রেতারা বলেন, আসলেই যদি দাম নির্ধারণ করা হয় তাহলে বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে, যারা বেশি দামে বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। না হলে সাধারণ ক্রেতাদের জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা বেশি দাম আদায় করবে।
মাংস কিনতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, খবরে শুনেছি গরুর মাংসের দাম থাকবে ৬৫০ টাকা কেজি। কিন্তু বাজারে এসে এর সত্যতা মিলছে না। সব দোকানেই তারা ৭০০ টাকা আবার ৭২০ টাকা করে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি করছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, যারা গরু কিনে বা মাংস কিনে এনে স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রি করছে তারা ৭০০ টাকায় বিক্রির পরও লস হয়ে যাচ্ছে। এর চেয়ে কম দামে বিক্রি করার কোনো উপায় নেই তাদের।
দাম নির্ধারণের পরও কেন বেশি দামে গরুর মাংস বিক্রি করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মাংস বিক্রেতা কামরুল ইসলাম বলেন, ৭০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে আজ, বিশ্বাস করেন তবুও আমাদের লস হয়ে যাচ্ছে। আমাদের স্থানীয় পর্যায়ে গরু কেনায় দাম পড়ছে বেশি। গরু কিনে আনা, কর্মচারী, দোকান ভাড়া সব মিলিয়ে অতিরিক্ত খরচ পড়ে যায়। এই অবস্থায় ৬৫০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করলে লস হয়ে যাবে অনেক। যারা দাম নির্ধারণ করেছে তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কিছুটা দাম কমিয়ে বর্তমানে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। কিছুদিন আগেও আমরা ৭৮০ টাকা বিক্রি করেছি। বর্তমানে ৭০০ টাকায় বিক্রি করছি, এর চেয়ে কমে আমরা বিক্রি করলে লোকসানে পড়ে যাব।
এ ব্যাপারে চান্দনা চৌরাস্তা কাঁচামাল আড়তদার মালিক গ্রুপের সভাপতি আব্দুস সোবহান বলেন, বিএনপির অবরোধে মালামাল পরিবহনে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে থাকেন। অনেক সময় ভাড়া বেশি দিতে হয়, যার প্রভাব পড়ে বাজারে। তবে সারা দেশে ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন