দিনাজপুরের বিরামপুর কৃষিপ্রধান ও কৃষিনির্ভর একটি উপজেলা। এখানে কৃষকরা একটি জমিতে বছরে পর পর তিনটি ফসল উৎপাদন করেন। ধান, ভুট্টা, আলু, গমসহ সব ধরনের ফসল চাষে এই উপজেলা খ্যাত। তবে অন্যান্য ফসলের তুলনায় ধান চাষের পর সরিষার চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চাষ করা হয়েছে সরিষার। উপজেলার যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ। সরিষার হলুদ ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করে মধু সংগ্রহ করতে উড়তে দেখা যাচ্ছে মৌমাছিদের।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে দেখা গেছে, এবার ভুট্টা ও আলু চাষের পাশাপাশি সরিষা চাষও হয়েছে ব্যাপকহারে, যা আগে কোনোদিন দেখা যায়নি। ফলে এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার কয়েকজন সরিষা চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আবহাওয়া ভালো থাকলে ১ বিঘা জমিতে প্রায় ৫ থেকে ৭ মণ করে সরিষার ফলন হয় এবং সরিষা চাষে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলে খরচের তুলনায় লাভ বেশি থাকায় সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা।
ভেলারপাড় গ্রামের সরিষা চাষি ইয়াছিন আলী, আব্দুল হালিম ও সিরাজুল ইসলাম জানান, এ বছর এ এলাকায় একেকজন চাষি সরিষা চাষ করেছেন ৫ থেকে ৬ বিঘা জমিতে। তুলনামূলক খরচও হয়েছে অনেক কম। তা ছাড়া সরিষা চাষে সেচ ও সার কম লাগে। অন্যদিকে ধান তোলার পর আগাম সরিষা চাষ করে আবার ধান চাষ করা যায়।
বিরামপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এত পরিমাণে সরিষার চাষ এর আগে কখনো হয়নি। গত বছর ১৩৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। আর এ বছর ১৭৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে, যা আগের তুলনায় বেশি। আমরা এ বছর ৩ হাজার ৭০০ জন কৃষককে ১ কেজি করে সরিষার বীজ বিনামূল্যে প্রদান করেছি। আশা করছি, সরিষা চাষ করে কৃষক লাভবান হবেন এবং আগামীতে সরিষা চাষে আরও উৎসাহিত হবেন।
মন্তব্য করুন