কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় যুবক ও যুবতীকে একটি ঘরের মধ্যে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের একটি ভিডিও নজরে আসার পর ওই যুগলের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ৩ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে জেলা পুলিশের নজরে আসে। ভিডিওটি উপজেলার গৌরীপুর এলাকার বলে দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন।
পুলিশ বলছে, গত বছরের মার্চের দিকে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে তবে দুদিন আগে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাদের নজরে আসে।
ভিডিওর শুরুতে একটি ঘরের মধ্যে এক ব্যক্তি ও এক নারীর সঙ্গে কয়েকজনকে ধস্তাধস্তি করতে দেখা যায়। এর মধ্যেই লাল টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি ওই নারীকে আগলে রাখার চেষ্টা করছিলেন। এর পরপরই ওই নারীকে মেঝেতে পাতা বিছানায় ফেলে কয়েকজন ঘিরে রাখেন। তারপর লাল টি-শার্ট পরা ব্যক্তিকে এবং ওই নারীকেও বিবস্ত্র করা হয়।
ওসি মোজাম্মেল হক বলেন, প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছি, ভাইরাল ভিডিওটি গত বছরের মার্চ মাসের গৌরীপুর এলাকার। দুই দিন আগে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আমাদের নজরে আসে। তবে প্রাথমিকভাবে তেমন কিছু জানা যায়নি। ভিকটিমদের খুঁজে পেলে ঘটনার কারণ ও জড়িতদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
তিনি আরও বলেন, ভিডিওটি যখনই করা হোক না কেন, এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা ভিকটিমদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।
ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে পুলিশের ধারণা হয়েছে, ভুক্তভোগীরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই কক্ষে ভাড়া থাকতেন। নির্যাতনকারীরা তাদের প্রেমিক-প্রেমিকা সন্দেহ করে আটক করে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান বলেন, এরই মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। তবে ভিকটিমদের পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি, ভিকটিম ছেলেটি বর্তমানে দেশের বাইরে থাকেন। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না। ভুক্তভোগীরা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী কি না, সেটাও জানা সম্ভব হয়নি।
ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে জানিয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, আমাদের একাধিক টিম এটা নিয়ে কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের ধরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন