সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ‘গোপন তথ্য’ ফাঁস করেছেন তারই আপন ছোটভাই মাহবুবুজ্জামান আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সমাজকল্যাণমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা নন, তিনি কাগজ বানিয়ে নিজে মুক্তিযোদ্ধা সেজেছেন। যুদ্ধের সময় তিনি ইন্ডিয়ায় বসে পাটের ব্যবসা করেছেন।’
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী এলাকায় আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হকের এক নির্বাচনী জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান। মাহবুবুজ্জামান জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বক্তব্যে মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘আপনি লেখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, কোনোদিন আপনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন? যুদ্ধের সময় আমি ক্লাস ফোরে পড়ি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিল আমার বাবা আর এক ভাই অধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান। আপনি তো ইন্ডিয়ায় বসে পাটের ব্যবসা করেছেন। ১৯৯৬ সালে যখন নমিনেশন পেলেন তখন পোস্টারে লিখে দিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তখন বিব্রত হয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মানিক মিয়া ডেকে বলেছিলেন, তুই এটা দিসিস কেন? তখন তিনি (মন্ত্রী) বলেছেন, আমি সার্টিফিকেট বানায় নিছি, আমার কাছে কাগজ আছে।’
ওই নির্বাচনী জনসভায় লালমনিরহাট-২ আসনের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল হক, আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস, কমলাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ ওমর চিশতিসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের চামটাহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় নির্বাচনী প্রচারণায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার ঘাড় মটকে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ ওঠে লালমনিরহাট-২ আসন নৌকার প্রার্থী সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বিরুদ্ধে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হকের নির্বাচনী কর্মী বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মর্তুজা হানিফকে এ হুমকি দেন তিনি। মন্ত্রীর বক্তব্যটি মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। গোলাম মর্তুজা হানিফ ভোটমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীকে ভোট করছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল হক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে ভোট করছেন।
মন্ত্রীর ছোট ভাই মাহবুবুজামান আহমেদ বড় ভাইয়ের নৌকার ভরাডুবি করতে মরিয়া হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় মন্ত্রীর নানা অনিয়ম নিয়ে কথা বলছেন।
মন্তব্য করুন